শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো কিডনি। শরীরের যাবতীয় টক্সিন বের করে দেওয়ার কাজটি করে এই অঙ্গটি। ফলে কিডনি সুস্থ রাখা অত্যন্ত জরুরি। যদি সেই কিডনিতে সমস্যা তৈরি হয়, শরীরের অন্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গেও তার প্রভাব পড়বে। ধীরে ধীরে শরীরের সব অঙ্গ বিকল হতে শুরু করবে। তাই কিডনি ভালো রাখা সবচেয়ে জরুরি। নয়তো মারাত্মক বিপদ হতে পারে।
অনেক নিয়ম মেনেও কিডনির সমস্যা দেখা দেয়। একবার কিডনির রোগ ধরা পড়লে নিয়ম আরও বেশি করে মেনে চলা জরুরি। যাতে কিডনি রোগ শরীরে ছড়িয়ে না পড়ে। বিশেষ করে কী খাচ্ছেন, সেটা অত্যন্ত জরুরি। কারণ এই রোগে ইচ্ছা করলেই সবকিছু খাওয়ার সুযোগ থাকে না। অনেক নিয়ম মেনে চলতে হয়।
চিকিৎসকদের মতে, কিডনির রোগীদের সোডিয়াম আর ফসফরাসসমৃদ্ধ খাবার বেশি না খাওয়াই ভালো। বাইরের প্রক্রিয়াজাত খাবারে এ ধরনের উপাদান অনেক বেশি থাকে। ফলে প্যাকেটজাত খাবার বেশি না খাওয়াই ভালো। কারণ এ ধরনের খাবারে সোডিয়ামের পরিমাণ অনেক বেশি। রোজ পাতে কমাতে হবে নুনের পরিমাণও। প্রোটিন ও দুগ্ধজাত খাবারের পরিমাণও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সারাদিনে খুব বেশি হলে ৭৫ গ্রাম মতো মাছ খেতে পারেন। একবেলা একটা ছোট টুকরো মাছ খেলেই যথেষ্ট। দিনে মাছ কিংবা মাংস খেলে রাতে আর কোনো প্রোটিন খাওয়া যাবে না। ডাল, দুধ, পনিরও বেশি না খাওয়াই ভালো। পটাশিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করাও জরুরি। না হলে কিডনি রোগের পাশাপাশি হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। কমলালেবু, মুসাম্বি লেবুর মতো কোনো টক ফল খেলেও হতে পারে সমস্যা। কিডনির রোগীদের খাদ্যতালিকা বানাতে হবে কিছু নির্দিষ্ট খাবার দিয়ে। মনে রাখতে হবে, শরীরের টক্সিন ও বর্জ্য যত কম তৈরি হয়, এমন খাবার বাছতে হবে। ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি, ক্র্যানবেরিজ, কালো আঙুর, অলিভ অয়েল, বাঁধাকপি, ডিমের সাদা অংশ খাওয়া যেতে পারে। ভাত বা রুটির বদলে ডালিয়া, কিনোয়া, গ্লুটেনমুক্ত শস্য খেতে পারেন। প্রোটিন জাতীয় খাবার যে একেবারে খাওয়া যাবে না, তা নয়। তবে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে খেতে হবে। সে ব্যাপারে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া জরুরি।  বেশি শক্ত খাবার খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে। কারণ কিডনিতে সমস্যা তৈরি হওয়া মানে শরীরের বাকি ক্রিয়াকলাপও কমজোরি হয়ে পড়ে। ফলে বেশি ভারী খাবার খেলে সহজে হজম হতে চায় না। তাতে সমস্যা হয়।v