২৫ বছর বয়সে অভিমানে বাড়ি ছেড়েছিলেন হারেজ আলী। সেটা ১৯৯০ সাল। এর মধ্যে তাঁর ফেরার অপেক্ষায় প্রহর গুনতে গুনতে মারা গেছেন বাবা চেনু খাঁ। তাঁর সন্ধানে শুরুতে পোস্টারিং, মাইকিং করেও ফল হয়নি। ফলে আশা ছেড়ে দিয়েছিল পরিবার।

তবে ৩৩ বছর পর অবশেষে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বাড়িতে ফিরেছেন স্বল্পভাষী হারেজ। রোববার তাঁকে চুয়াডাঙ্গা থেকে বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের সাইংজুরি গ্রামে নিয়ে আসেন স্বজনরা।

হারেজ ফেরার পর ছোট বোন নূরজাহান বেগম বলেন, ভাই কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন ও অসুস্থ। আগে থেকেই কথাবার্তা কম বলেন। ৩৩ বছর পর একমাত্র ভাইকে ফিরে পেয়ে তারা সবাই আনন্দিত।

পরিবারে নূরজাহানের বৃদ্ধ মা আর স্বামী আছেন। তারা সবাই হারেজের ফেরার অপেক্ষা ছেড়েই দিয়েছিলেন। প্রতিবেশীদের কেউ ধারণা করেছিলেন, হয়তো তিনি বেঁচে নেই। তবে ফেরার সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে গ্রামের মানুষ এক নজর হারেজকে দেখতে ভিড় করেন।

স্থানীয় বাসিন্দা মালেক দেওয়ান হারেজকে আনতে স্বজনদের সঙ্গে চুয়াডাঙ্গা গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, চুয়াডাঙ্গায় মতিয়ার রহমান নামে এক ব্যক্তি তাঁকে লালনপালন করছিলেন। তারা সবাই খুব ভালো মানুষ। এতোদিন হারেজ কথাবার্তা বলতে পারেনি। যে কারণে তারা ঠিকানা বের করতে পারেননি। কিছুদিন আগে হঠাৎ হারেজ ভাঙাকণ্ঠে বাড়ির ঠিকানা বলেন। এর সূত্র ধরেই মতিয়ার রহমান মানিকগঞ্জে বাড়ি খোঁজার চেষ্টা করেন।

ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রহমান বলেন, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার হোগলডাঙ্গা গ্রামের মতিয়ার রহমানের বাড়িতে ঠাঁই পেয়েছিলেন হারেজ আলী। তিনিই বালিয়াখোড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আওয়ালকে ফোন করে পরিবারের সন্ধান চান। এরপর বিষয়টি জানতে পেরে দামুড়হুদা থানায় যোগাযোগ করি। রোববার পরিবারের সদস্যরা হারেজ আলীকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।