টিকটক ভিডিও বানাতে দামি মোবাইল ফোনের প্রয়োজন বোধ করে এক কিশোর। এ জন্য বাবার কাছে কয়েক দফায় টাকা চেয়েও পায়নি। অবশেষে চাচাতো ভাইসহ তিনজকে নিয়ে অপহরণের নাটক সাজিয়ে বাবার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করে। তবে সেই পরিকল্পনা সফল হয়নি। গত রোববার বগুড়ার গাবতলী মডেল থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।

গাবতলী উপজেলার একটি কওমি মাদ্রাসায় নবম শ্রেণিতে পড়ে ওই কিশোর। আটকের পর সে ও তার দুই সহযোগী পুলিশকে জানায়, এ বছরের শুরুতে বাবার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে একটি স্মার্টফোন কেনে সে। ফোন দিয়ে ভিডিও ধারণ করে টিকটকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড করত। আরও ভালো ভিডিও বানাতে আরও দামি ফোন কেনার সিদ্ধান্ত নেয় ওই কিশোর। কয়েকবার বাবাকে অনুরোধ করেও সাড়া পায়নি। তাই বাবার কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে চাচাতো ভাই খায়রুল ইসলাম লিমনকে নিয়ে অপহরণ নাটক সাজায়। 

পরিকল্পনা অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার মাদ্রাসা থেকে বই কেনার কথা বলে সে বেরিয়ে যায়। লিমনের বন্ধু আকাশের সঙ্গে বগুড়া শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘোরাফেরা করে রাতে সদর উপজেলার পীরগাছাতে এক পতিত জমিতে গিয়ে আশ্রয় নেয়। আর সন্দেহ এড়াতে লিমন মেস থেকে পরিবারের সবার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে থাকে। ওই ছাত্রের স্বজনরা শুক্রবার থেকে তাকে খোঁজাখুঁজি করছিল। রোববার ভোরে সে ও আকাশ বগুড়া শহরের তিনমাথা রেলগেট এলাকায় যায়। সেখানে আকাশ অপহরণকারী সেজে ফোন করে ওই কিশোরের বাবার কাছে তিন লাখ টাকা দাবি করে। এরপর তারা ফোন বন্ধ করে মালগ্রামে লিমনের মেসে চলে যায়। 

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার জানান, ওই ছাত্রের বাবা রোববার বিকেলে অভিযোগ জানালে তদন্ত শুরু হয়। ঘটনাপ্রবাহ জানার পর লিমনের ওপর সন্দেহ থেকে তার বন্ধু মেহেদীকে ডিবি পুলিশের কার্যালয়ে ডেকে আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে অপহরণ নাটকের কথা জানায়। পরে মেসে অভিযান চালিয়ে মাদ্রাসাছাত্রকে উদ্ধার ও লিমনকে আটক করা হয়। তবে ওই ছাত্রের বাবা কারও বিরুদ্ধে মামলা না করায় আটকদের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।