জাতীয় সংসদের হুইপ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেছেন, ‘ঈদের সেমাই বা পূজার লাড্ডুর কোনো ধর্মচরিত্র নেই, এগুলো সার্বজনীন। আবহমান কাল ধরে বাংলার জনগণ যার যার নিজ নিজ ধর্ম, আচার ও সংস্কৃতি উৎসবের সঙ্গে পালন করে আসছে। এক ধর্ম বিশ্বাসী বাঙালিরা অপরের ধর্ম উৎসবের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে উৎসবকে সার্বজনীন করে তুলেছেন।’

শুক্রবার জয়পুরহাট শহরে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

হুইপ স্বপন বলেন, ‘সারাদেশে ঈদের দিন মুসলমানের ঘরে ঘরে অন্য ধর্মালম্বীরা সেমাই, মিষ্টান্ন ও অন্যান্য খাদ্য গ্রহণ করেন। তেমনি হিন্দুদের পূজায় তাদের ঘরে লাড্ডু, লাবড়া, লুচি সব ধর্মালম্বীগণ সাদরে আহার করেন। কোথাও কোনো হিংসা-বিদ্বেষ ছড়ায়নি। কিন্তু সাম্প্রতিককালে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্যে এক ধর্মের সঙ্গে অন্য ধর্মের সংঘর্ষ লাগানোর অপচেষ্টা লক্ষ্য করা যায়। এদের উদ্দেশ্যের পেছনে কোনো ধর্ম বিশ্বাস নেই। এরা সমাজে হিংসা-বিদ্বেষ ছড়িয়ে বাঙালি জাতিকে দাবিয়ে রাখতে চায়। আমাদের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক মুক্তির সংগ্রামকে নষ্ট করে বাঙালির মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর স্বপ্ন ধ্বংস করতে চায়।’

তিনি বলেন, ‘জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের সব ধর্মের মর্যাদা রক্ষা করে বাঙালির মুক্তির সংগ্রামের যে পথ দেখিয়ে গেছেন, প্রত্যেক বিবেকবান দেশপ্রেমিক নাগরিকের পবিত্র দায়িত্ব সেই মুক্তির সংগ্রামকে অর্থবহভাবে সফল করতে মানবিক ভূমিকা পালন করা।’

জয়পুরহাট শহরের শিবমন্দির প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত শোভাযাত্রা পূর্ব সুধী সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক ইসলাম, পুলিশ সুপার মাসুম আহমেদ ভূঁইয়া, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ প্রশাসক আরিফুর রহমান রকেট, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন মণ্ডল, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম সোলায়মান আলী, পৌর মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক প্রমুখ। সভায় সভাপতিত্ব করেন পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট হৃষিকেশ সরকার, সঞ্চালনা করেন অধ্যাপক সুমন কুমার সাহা। 

অনুষ্ঠান ও শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাংবাদিক অ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্র নাথ মণ্ডল পিপি। 

অনুষ্ঠান শেষে কয়েক হাজার সনাতন ধর্মালম্বীগণের অংশগ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করে।