কয়েকদিন আগেও যেখানে ছিল ঝোপঝাড়ে ভরা ময়লার ভাগাড়। এলাকাবাসী এবং পথচারীরা ময়লা ফেলতেন। ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ ছিলেন পথচারী ও যাতায়াতকারীরা। সেই এলাকা এখন হয়ে গেছে ফুলের বাগান।

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌরসভা সংলগ্ন শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ের ঘোড়াশাল ফ্ল্যাগ রেলওয়ে স্টেশনের দুই পাশে গড়ে তোলা ফুলের বাগানের দৃশ্য সবাইকে চমকে দিচ্ছে।

সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসলেই অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হতো স্থানটি। ঝোপঝাড়ে লুকিয়ে থেকে নানা অপকর্মে লিপ্ত হতো তারা। তাদের হাতে ছিনতাইয়ের শিকার হতে হয়েছে পথচারীদের।

এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি, রেলওয়ে স্টেশনের দুই পাশের ঝোপঝাড় ও ময়লা যেন পরিষ্কার করা হয়। এ দাবিতে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসেন ঘোড়াশাল পৌর মেয়র আলহাজ্ব শরীফুল হক ও পলাশ উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ জাবেদ হোসেন। 

তাদের প্রচেষ্টায় ঘোড়াশাল পৌরসভার অর্থায়নে ঝোপঝাড় ও ময়লার ভাগাড় সরিয়ে তৈরি করা হয়েছে ফুলের বাগান। এ উদ্যোগটি স্থানীয়ভাবে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।

রেলওয়ের যাত্রী এস.এ গাজী বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই স্টেশনের ঝোপঝাড় ও ময়লা পরিষ্কার করার জন্য দাবি জানিয়ে আসছিলাম। অবশেষে আমাদের দাবি পূরণ করে এখানে ফুলের বাগান তৈরি করায় ধন্যবাদ জানাচ্ছি ঘোড়াশাল পৌরসভার মেয়র ও পলাশ উপজেলা চেয়ারম্যানকে।’

পথচারী আবু বকর সিদ্দিক জানান, সন্ধ্যা হলেই অপরাধীরা এখানকার ঝোপঝাড়ে লুকিয়ে থেকে নেশা জাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করে ছিনতাই করতো। এতে আতংকের মধ্য দিয়ে আমাদের চলাফেরা করতে হতো। এই স্থানের ময়লা ও ঝোপঝাড় পরিষ্কার করে ফুলের বাগান তৈরি করায় ছিনতাইকারীরা আর সহজে এখানে তাদের অপকর্ম চালাতে পারবেন না।’

চাকুরিজীবি শাহ আরিফুর রহমান জানান,পলাশে তেমন কোন বিনোদন কেন্দ্র নাই। ঘোড়াশাল রেল স্টেশন এলাকাতে  ফুলের বাগান করে বিনোদন স্পট হিসেবে রূপান্তর করা হয়েছে তা দেখার মতো।

সাংবাদিক আক্তারুজ্জামান জানান, রেলওয়ে ফ্লাগ স্টেশনের প্লাটফর্মটি আধুনিকায়ন করার ফলে সকাল বিকাল এখানে প্রতিদিন শত শত ডায়াবেটিস রোগী সহ বিভিন্ন লোকজন হাঁটাহাঁটি করতে এসে নানান বিড়ম্বনার শিকার হতো। কিন্তু ঝোপঝাড় পরিষ্কার করে এখানে ফুলের বাগান করাতে এখানকার পরিবেশ পাল্টে গেছে। 

ঘোড়াশাল পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব শরীফুল হক বলেন, ‘রেলওয়ে যাত্রী ও পথচারীদের নির্বিঘ্নে চলাচল ও দুর্গন্ধ মুক্ত পরিবেশ করতেই এর দুই পাশের ঝোপঝাড় সরিয়ে সবুজায়ন ও দৃষ্টিনন্দন ফুলের বাগান তৈরি করা হয়েছে। এ পরিবেশ ধরে রাখতে হলে যাত্রী ও পথচারীদেরও এগিয়ে আসতে হবে।’ 

পলাশ উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ জাবেদ হোসেন বলেন, ‘ঘোড়াশাল পৌর মেয়র আলহাজ্ব শরীফুল হক যে প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছেন সেটির সাথে শুরু থেকেই আমি ছিলাম। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা করার পর সেসব স্থানে যেন ফের ময়লার ভাগাড়ে পরিণত না হয়, সে বিষয়ে সকলের সচেতনতা দরকার।’