প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে ধামরাইয়ের ১৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার বাসিন্দারা যেমন সরকারের বিভিন্ন নির্দেশনা অমান্য করে চলেছেন, তেমনি অমান্য করে চলেছেন উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা। যদিও বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের লক্ষ্যে কর্মস্থলে সার্বক্ষণিক থাকার বিষয়ে গত ২২ মার্চ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সংস্থাপন অধিশাখার উপসচিব মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খানের স্বাক্ষরিত নির্দেশনা রয়েছে। গতকাল শনিবার পর্যন্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি), উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কোনো কর্মকর্তাকেই কর্মস্থলে পাওয়া যায়নি। ফলে জনসংখ্যা ও আয়তনের দিক থেকে ধামরাইয়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে উপজেলা প্রশাসন।

কর্মকর্তাদের সহযোগিতা না পেলেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সামিউল হক তার দপ্তরের কর্মচারী ও স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে স্বেচ্ছাসেবকদের দিয়ে কয়েক দিন ধরেই ১০ কেজি চাল, আধা কেজি ডাল, আধা কেজি তেল প্যাকেটজাত করে জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় করোনার প্রভাবে কর্মহীন মানুষের মধ্যে বিতরণ করছেন। রাস্তায় ভাসমান কর্মহীন, প্রতিবন্ধী, বয়স্ক ব্যক্তি, ভিক্ষুক, ভবঘুরে, দিনমজুর, রিকশাচালক, ভ্যানগাড়ি চালক, পরিবহন শ্রমিক, রেস্টুরেন্ট শ্রমিক, ফেরিওয়ালা, চা শ্রমিক, চায়ের দোকানিসহ যারা দৈনিক আয়ের ভিত্তিতে সংসার চালান, তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রতিদিন খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি।

এ বিষয়ে ধামরাইয়ের ইউএনও সামিউল হক বলেন, কর্মকর্তাদের থাকার আবাসিক ভবন রয়েছে, কিন্তু কেউ থাকেন না, সবই ফাঁকা। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সার্বক্ষণিক কর্মস্থলে থাকার বিষয়ে প্রতিটি দপ্তরের কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। কিন্তু তারা কর্মস্থলে নেই। তাদের সহযোগিতা ও পরামর্শ পেলে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিতে আরও সহজ হতো। গত কয়েক দিনে পাঁচ হাজার কর্মহীনসহ নানা পেশার মানুষকে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

সার্বক্ষণিক কর্মস্থলে উপস্থিতির বিষয়ে ধামরাই উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, কর্মস্থলে থাকার নির্দেশনা রয়েছে ঠিকই, কিন্তু আমার পরিবার ঢাকায় থাকে বিধায় আমিও ঢাকাতেই থাকি। এদিকে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক লীনা আহম্মেদ বলেন, আমার থাকার প্রয়োজন হয় না। কারণ, আমার স্বামীর গাড়ি আছে, তাই আমি ঢাকা থেকেই অফিস করি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শাহিনুজ্জামানের মোবাইল ফোনে কয়েকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। এ ছাড়া উপজেলা প্রকৌশলী আজিজুল হকের নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদ বলেন, সব কর্মকর্তার কর্মস্থলে থাকার কথা। ইউএনওর সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্য করুন