মাসরুর চৌধুরী। রংপুরের আরসিসিআই পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেন। অন্য আট-দশজন শিক্ষার্থীর চেয়ে একটু আলাদাই যেন মাসরুর। তাঁর ধ্যানজ্ঞানজুড়ে লেখালেখি। এরই মধ্যে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে বেশ কিছু বই। অ্যামাজনের ওয়েবসাইটেও শোভা পাচ্ছে তাঁর বই। অ্যামাজন বিভিন্ন বিষয়ে লেখা নিয়ে বই প্রকাশ করে। তাঁর স্বপ্ন ছিল অ্যামাজনে পাণ্ডুলিপি জমা দেবেন। লেখা শেষ হলে যোগাযোগ করেন অ্যামাজনের সঙ্গে। জমা দেন লেখা। রিভিউ করে অ্যামাজন জানাল, তাঁর বই প্রকাশ করা হয়েছে।

তা ছাড়া গুগল প্লে এবং অ্যাপলে জায়গা করে নিয়েছে মাসরুরের বইগুলো। শিক্ষার্থীরা যখন পাঠ্যবইয়ের ইংরেজি পড়তেই হিমশিম খায়, ঠিক সেই সময়ে ইংরেজিতে বই লিখে সাড়া ফেলে দেন এই তরুণ। এরই মধ্যে অনলাইনে গড়ে উঠেছে তাঁর বিশাল পাঠকসমাজ। তাঁর লেখা ই-বুক কিনেছেন প্রায় ১০ লাখ পাঠক। মাসরুরের লেখা Identity Changes, Important advice of Lokman Hakim to his son, A Terribly Beautiful Life, My Inter Life Story বইগুলো অ্যামাজন, গুগল প্লে এবং অ্যাপলের মতো বড় বড় প্রতিষ্ঠানের লেখক দ্বারা প্রত্যয়িত। বিভিন্ন দেশে হচ্ছে তাঁর বই নিয়ে আলোচনা।

মাসরুরের লেখা মোট পাঁচটি বইয়ের মধ্যে দুটির হার্ড কপি এরই মধ্যে দেশের বাজারে এসেছে। তবে খুব সহজ ছিল না লেখক হিসেবে যাত্রা শুরুর গল্পটা। বাবা মেছবাহুল ইসলাম চৌধুরীর লেখা ডায়েরি অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে পুড়ে যেতে দেখেছেন মাসরুর। বাবার পুড়ে যাওয়া সেই স্বপ্নগুলো নিয়েই ১১ বছর বয়সে লিখেন ‘বিদ্যালয়’ শিরোনামে একটি কবিতা। এরপর পড়াশোনার চাপে বহুদিন লেখালেখিতে তেমন মনোযোগ দেওয়া হয়নি। কলেজে অধ্যয়নের সময় কিছু ছোটগল্প ও কবিতা লিখেন তিনি।

২০২০ সালে করোনার সময় ফের লেখালেখি শুরু করেন। বাস্তব অভিজ্ঞতা ও তরুণদের বিভিন্ন সমস্যা ও তার সমাধানের উপায় নিয়ে লিখতে থাকেন। নিজের লেখালেখির কথা জানতে চাইলে মাসরুর চৌধুরী বলেন, ‘শুধু ক্যারিয়ার নয়, একজন মানুষ হিসেবে সব দিক দিয়েই সমানভাবে বেড়ে উঠতে হয় আমাদের। সেই সঙ্গে ঘটাতে হয় নিজের বিকাশ। তবেই অন্যের উপকার করা সম্ভব। আর অবদান রাখা যায় সমাজ ও দেশের কল্যাণে। আমি আমার লেখালেখির মাধ্যমে সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছি।’