স্বাধীনতার পাঁচ দশক পরও দেশের নারীরা  অনেক ক্ষেত্রে তাদের অধিকার কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও একই মাত্রায় তাদের ক্ষমতায়ন হয়নি। সংবিধানের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২-এর নির্দেশনা অনুযায়ী রাজনৈতিক দলের কমিটিসমূহে এখনও ন্যূনতম ৩৩ শতাংশ পদে নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয়নি। নারীদের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে সদস্য, উপজেলা পরিষদে ভাইস চেয়ারম্যান আর সংসদে সংরক্ষিত আসন রাখা হলেও তাদের উল্লেখযোগ্য ও সুনির্দিষ্ট কোনো ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে সদিচ্ছা নিয়ে কাজ করতে হবে। সংরক্ষিত আসনের বাইরে জাতীয় সংসদ থেকে সব প্রতিনিধিত্বমূলক মূল পদে তথা নির্বাচনে মনোনয়ের ক্ষেত্রে পুরুষের পাশাপাশি নারীকে অধিকতর হারে সুযোগ দিতে হবে। গত ২১ মার্চ ২০২৩ সমকালের সভাকক্ষে ‘স্বাধীনতার পাঁচ দশক এবং নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক গোলটেবিলে বক্তারা এসব কথা বলেন। অপরাজিতা ও সমকাল যৌথভাবে এ বৈঠকের আয়োজন করে।

শিরীন আখতার, এমপি

সমাজের যা কিছু আছে, তা সৃষ্টিতে নারীর অবদান দুই-তৃতীয়াংশ। নারীকে নানা বাধার মধ্যে কাজ করতে হয়। আমাদের পুরুষতান্ত্রিক নির্ভরতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। সেই সংগ্রামটা নারীকে একটু বেশি মাত্রায় করতে হবে। নারী আর পুরুষ আমরা উভয়ই সমান। কিন্তু নারীদের এ অবস্থা থেকে উঠে আসতে পুরুষের খুব কাছাকাছি থেকে একটু বেশি হাঁটতে হবে। পরিবার, সমাজ, কর্মক্ষেত্র, রাজনীতি আর সংসদে আমাদের বেশি হাঁটা আর সংগ্রাম করতে হবে। নারীকে রাজনীতি করার সময় পুরুষের থেকে বেশি নানামুখী সহিংসতার মুখোমুখি হতে হয়। তাদের শরীরে আঘাত না এলেও কথার আঘাতে বেশি অসুস্থ হতে হয়। আমি প্রথমবার এক পুরুষ সঙ্গীর সঙ্গে আটক হই। সেদিন থানায় পুরুষ সহকর্মীকে প্রচুর মারধর করা হয়। কিন্তু আমাকে শারীরিকভাবে আঘাত না করলেও, প্রকাশ অযোগ্য অশালীন ভাষায় আমাকে মানসিক নির্যাতন করা হয়। এ জায়গাটায় পুরুষ আর নারীর মধ্যে পার্থক্য। মুক্তিযুদ্ধের সময় পুরুষরা দুটো কাজ করেছে; এক দেশ রক্ষার সংগ্রাম, আরেকটা জীবন রক্ষার সংগ্রাম। আর নারীরা দেশ রক্ষার সংগ্রাম এবং জীবন রক্ষার সংগ্রামের সঙ্গে নিজেকে রক্ষার সংগ্রামও করেছে। নারীর সংগ্রামটা এক কদম বেশি। নারীকে নিজেকে রক্ষার জন্য নিজের থেকে এ লড়াইটা শুরু করতে হবে। পরিবার থেকে শুরু করে সর্বক্ষেত্রে নিজেকে রক্ষা করে চলতে হবে। আবার রাজনৈতিক সন্ত্রাসে নারীরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এ সন্ত্রাস মোকাবিলা করতে নারীকে ঐক্যবদ্ধ কাজ করতে হবে। রাজনৈতিক সদিচ্ছা নিয়ে কাজ করতে হবে। সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীকে শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে হবে। বিভিন্ন কমিটিতে অংশগ্রহণের সঙ্গে আরও বেশি করে সাধারণ নারীর সংগ্রামে শামিল করতে হবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে নারীর যোগ্যতার ভিত্তিতে তাদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে অন্তর্ভুক্তি করতে হবে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী পুরুষতান্ত্রিকতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে নারী সংরক্ষিত আসন বাড়ানো আর উপজেলা পরিষদে নারী ভাইস চেয়ারম্যানের পদ সৃষ্টি করেছেন। নারী অধিকার রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।


আরমা দত্ত

১৯৯৭ সালে ইউনিয়ন পরিষদে নারীরা যখন প্রথম সদস্য পদে নির্বাচনের সুযোগ পায়, তখন থেকেই তাদের নিয়ে কাজ শুরু করি। সে সময় ইউনিয়ন পরিষদে কাজ করতে গিয়ে দেখতে পাই, পরিষদের কক্ষে চেয়ারম্যান তাঁর টেবিলে বসে আছেন। নারী সদস্যরা চেয়ারম্যানকে স্যার সম্বোধন করে তাঁর নির্দেশমতো পরিষদের রান্নাবান্নার কাজ করছেন। সে সময় তাদের পরিষদের কক্ষেও বসার জায়গা হয়নি, তাদের জায়গা ছিল পরিষদের রান্নাঘরে। এই সময় থেকে নারীর ক্ষমতায়নের অন্তরায় বিষয়গুলো ধরে ধরে কাজ শুরু করি। বর্তমান সময়ে নারীরা এ পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে স্মার্টভাবে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সব জায়গায় জনপ্রতিনিধিত্বমূলক কাজ করছেন। তবে আমাদের আরও কাজ করতে হবে। সামাজিক, অর্থনৈতিক আর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে নারীকে কাজ করতে হবে। এ তিনটি সমানভাবে না এগোলে নারীর ক্ষমতায়ন সম্ভব না। আগে নারীর ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করার, তাদের পক্ষে কথা বলার জন্য কোনো জায়গা ছিল না। ইউনিয়ন পরিষদ হচ্ছে নারীর ক্ষমতায়নের প্রাথমিক প্ল্যাটফর্ম। সেখানে নারীর অংশগ্রহণের পাশাপাশি নীতিনির্ধারণী পর্যায়েও সিদ্ধান্ত গ্রহণে তাদের অংশীদারি বাড়াতে হবে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২-এর নির্দেশনা অনুসারে সব দলের বিভিন্ন কমিটিতে কমপক্ষে ৩৩ শতাংশ নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে আমাদের সমাজের তৃণমূল থেকেই কাজ করতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সংসদীয় আসনে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য নারীদের কৌশলগতভাবে কাজ করতে হবে। তাদেরই যুদ্ধ করতে হবে। পুরুষরা তাদের ক্ষমতার জায়গা ধরে রাখতে নানা চেষ্টা করবে। সেখান থেকে নিজেদের প্রমাণ করতে নির্বাচনের মনোনয়ন জমা দিতে হবে। সংসদীয় আসন বা সংশ্লিষ্ট এলাকায় কাজ করতে হবে। যাতে করে আমরাও রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী বোর্ডকে বলতে পারি, কেন নারীকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি, লড়াই করেছি, আমরাই পারব নারীর ক্ষমতায়ন বাড়াতে। নারী জাগরণেই এটি সম্ভব হবে।


সেলিমা রহমান

নারীর ক্ষমতায়ন আর নারীর অধিকার যাই হোক না কেন, সবকিছু শুরু হতে হবে তৃণমূল থেকে। আমরা সুবিধাভোগী যারা আছি, তাদেরও যুদ্ধ করে এগিয়ে আসতে হলেও, আমরা অনেক সুবিধা পেয়ে এগিয়ে এসেছি। কিন্তু যারা তৃণমূল পর্যায়ে আছে, তারা অনেক পিছিয়ে আছে। তাদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো সবচেয়ে বড় কাজ। নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলি কিন্তু নারীর সাম্য না হলে তা সম্ভব নয়। পুরুষের সমান সুযোগ-সুবিধা না পেলে নারীর অধিকারও রক্ষা হবে না। সিদ্ধান্ত গ্রহণে মূলধারায় যদি সম্পৃক্ত হতে না পারে, তাহলে নারীর ক্ষমতায়ন সম্ভব না। নারীরা আজকে অনেক এগিয়েছে। নারীরা প্লেন চালাচ্ছে, পুলিশ হচ্ছে, ব্যাংকার হচ্ছে, অফিস-আদালতে বিভিন্ন জায়গায় কর্মমুখী হচ্ছে। তবুও সেখানেও সাম্য নেই। এখানেও যারা এসেছে, তারা অধিকাংশ তৃণমূলের সুবিধাবঞ্চিতভাবেই যুদ্ধ করে উঠে এসেছে। আমার পরিবারেও পড়াশোনার সুযোগ থাকলেও রক্ষণশীল মনোভাবের কারণে উচ্চমাধ্যমিক পর্যাইয়ে পড়ার সময় বিয়ে করতে হয়েছে। পরবর্তী সময়ে পরিবার আর স্বামীর সহযোগিতায় ডিগ্রি গ্রহণের সৌভাগ্য হয়। আমরা অর্জন করছি, কিন্তু এখনও অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আমরা রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সময়ে নিচের স্তর থেকে বর্তমান পর্যায়ে এসেছি পদে পদে যুদ্ধ করে। আমাদের প্রাপ্তি হয়েছে অনেক। এর পেছনে ছিল বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের পরিশ্রম। আমার সংসদ সদস্য নির্বাচনের সময়ও নারী হিসেবে অনেকে মেনে নিতে পারেনি। ফলে যুদ্ধ করেও অল্প ভোটে হারতে হয়েছে। নারীরা নির্বাচন করলে নির্বাচনের খরচের টাকা পর্যন্ত থাকে না। আবার নির্বাচনের সময় নারীরা বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিলেও বঞ্চনার কারণে তা আর পূরণ করতে পারে না। নারীর জন্য সংরক্ষিত আসন থাকলেও নির্বাচনে নারীর আরও বেশি নমিনেশন সংগ্রহ করতে হবে। তাদের দলীয় সমর্থনও বাড়াতে হবে। রাজনীতিতে জনগণের পাশে নারীকে আরও বেশি করে দাঁড়াতে হবে। তাদের অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।


অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভুঁইয়া

প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সচিবালয় পর্যন্ত নারীর অংশগ্রহণ আগের থেকে অনেক বেড়েছে। আইনে রাজনৈতিক দলসমূহে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনকালে বা নির্বাচনের জন্য মনোনয়নের সময় অনেক ক্ষেত্রে নারীদের পাওয়া যায় না। অনেক কমিটি করার সময় দলের মহিলাবিষয়ক পদটি পূরণ করার জন্যও নারী পাওয়া যায় না। আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে অনেক নারী পাচ্ছি, তার পরও পর্যাপ্ত পাচ্ছি না। অষ্টম ও নবম জাতীয় নির্বাচনের সময় আমার দলে এক হাজার মনোনয়ন জমা পড়েছিল। সেখানে নারীর সংখ্যা ছিল অনেক কম। অনেক ক্ষেত্রে নারীরা নির্বাচনের জন্য অর্থ পান না। সরাসরি নির্বাচন করার জন্য নারীরা তেমনভাবে এগিয়ে আসেন না।




অধ্যাপক সাদেকা হালিম

নারীর ক্ষমতায়নের জন্য নারীরা কাজ করছে। তারা পুরুষদের সঙ্গে সমানতালে কাজ করছে। কিন্তু পিছিয়ে পড়ছে নারীর কাজকে সংকীর্ণভাবে মূল্যায়নের মানসিকতার জন্য। ইউনিয়ন পরিষদে নারীরা নির্বাচিত হওয়ার পরও তাদের দূরে রাখা হয়। তাদের বিভিন্ন কমিটিতে রাখা হলেও সিদ্ধান্ত গ্রহণের বেলায় তাদের রাখা হয় না। সারাদেশে উপজেলা পরিষদে ভাইস চেয়ারম্যান পদ সৃষ্টি করলেও তাদের কোনো কাজে রাখা হচ্ছে না। তাদের স্বাক্ষর দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয় না। উন্নয়নমূলক কোনো কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না তাদের। পরিষদের সহজ কাজগুলোর বেলায় শুধু তাদের রাখা হচ্ছে। মূলত, তাদের নামমাত্র অলংকারের মতো ব্যবহার করা হচ্ছে। স্থানীয় পর্যায়ে রাজনীতিতে তাদের অংশগ্রহণ নেই। জাতীয় নির্বাচনের বেলায়ও তাদের মনোনয়ন দেওয়া হয় না। মেধা, মনন ও শিক্ষায় নারীরা এগিয়ে থাকলেও তাদের পিছিয়ে রাখা হচ্ছে। নারীদের মধ্যেও আবার বিভিন্ন প্রান্তিক বর্গের যারা, যেমন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারীরা, বহুমাত্রিক বৈষম্যের শিকার।  



ওয়াজেদ ফিরোজ

২০১১ সাল থেকে সুইজারল্যান্ডের অর্থায়নে অপরাজিতা প্রকল্পের কাজ শুরু হয়, যা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা তথা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক পরিসর ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণের হার ও কার্যকারিতা বাড়াতে কাজ করে। ২০১৮ সাল থেকে হেলভেটাস সুইস ইন্টারকোঅপারেশনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় এবং খান ফাউন্ডেশন, ডেমক্রেসিওয়াচ, প্রিপ ট্রাস্ট ও রূপান্তরের মাধ্যমে প্রকল্পটি দেশের ছয়টি বিভাগের মোট ১৬টি জেলার মধ্যে নির্বাচিত ৬২টি উপজেলার সর্বমোট ৫৪০টি ইউনিয়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে। অপরাজিতা প্রকল্পের কেন্দ্রে রয়েছে কর্মএলাকার সব ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান নির্বাচিত নারী জনপ্রতিনিধিসহ অনেক সাবেক বা আগামীর সম্ভাব্য নির্বাচিত নারী জনপ্রতিনিধি। এ ধরনের নারীনেত্রীরা, যাদের সংখ্যা ইউনিয়নপ্রতি ১৫ থেকে ১৭ জন–নিজেদের ‘অপরাজিতা’ নামে পরিচয় দিয়ে থাকেন। এভাবে ৫৪০টি ইউনিয়নের ৮,৫০০-এর অধিক নারী নেত্রী নিজ নিজ ইউনিয়নের অপরাজিতা নেটওয়ার্কের সদস্য হিসেবে সক্রিয় রয়েছেন। তাঁরা সারাদেশে যেসব নারী বিভিন্ন স্তরের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা তথা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশ নিচ্ছেন, তাঁদের পক্ষে কথা বলেন।




লায়লা বানু

১৯৯৭ সালে আইনের মাধ্যমে নারীর জন্য প্রথম ইউনিয়ন পরিষদে সদস্যের পদ সৃষ্টি করা হয়। ২০০৮ সালে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এর পর থেকে প্রান্তিক পর্যায়ে মেয়েদের প্রশিক্ষণের জন্য যাচাই-বাছাই কমিটিতে নারী ভাইস চেয়ারম্যানদের সভাপতি হিসেবে রাখা হতো। কিন্তু ২০২১ সালে নারী ভাইস চেয়ারম্যানদের এ কমিটির সভাপতি পদ থেকে বাদ দিয়ে সদস্য হিসেবে রাখা হয়। নারী ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাসোসিয়েশন থেকে এর কারণ হিসেবে জানতে চাইলে মহিলা অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়, এটি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় করা হয়েছে। কিন্তু তারা প্রধানমন্ত্রীর কোনো নির্দেশনার চিঠি দেখাতে পারেনি। আমাদের জাতীয় মহিলা সংস্থার কার্যালয় আছে, কিন্তু উপজেলা পর্যায়ে এর কোনো শাখা নেই। নারীদের উন্নয়নে উপজেলা পর্যায়ে নানা কমিটি আছে, কিন্তু সব কমিটিতে নারী ভাইস চেয়ারম্যানকে রাখা হয় না। তাদের চিঠিও দেওয়া হয় না।



সুলতানা আক্তার

আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলের নেত্রী, সংসদের স্পিকার সবাই নারী। কিন্তু এ দেশেই নারীর অধিকার নিয়ে কথা বলতে মিটিং, মিছিল, সমাবেশ করতে হয়। রাজনৈতিক দলের পদ থেকে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে নারীদের ৩৩ শতাংশ রাখার দাবি এ দেশে বেশি চাওয়া নয়। সরকারপ্রধানের কাছে দাবি থাকবে যেন ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের সব রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন পদে কমপক্ষে ৩৩ শতাংশ নারীর অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা হয়।




পারভীন আকতার

আমাদের উপজেলায় ইউনিয়ন পর্যায়ের রাজনৈতিক দলে ১০ জন করে নারী রাখা হয়েছে। জেলা পর্যায়ে ১৫ থেকে ১৮ শতাংশ নারীকে পদায়ন করা হয়েছে। সাম্প্রতিক ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দু’জন নারী চেয়ারম্যান পদে বিজয় লাভ করেন; এ ছাড়া চারজন নারী দলীয় মনোনয়ন ছাড়া নির্বাচন করে জিতে এসেছেন। জেলা পরিষদ নির্বাচনেও একজন নারী সাধারণ সদস্য পদে জয় লাভ করেন। তবে ১৯৭২ সালের গণপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব বাস্তবায়ন হয়নি। ২০২০ সালের মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে ৩৩ শতাংশ পদে নারী প্রতিনিধিত্ব রাখার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। আমরা চাচ্ছি, নারী প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে সুনির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করা হোক। সংবিধানের ৪ অধ্যায়ের ১৬ অনুচ্ছেদে যে ‘মহিলা’ শব্দটি রয়েছে, তা পরিবর্তন করে এটিকে ‘নারী’ করা হোক। কেন এতদিনেও নারীর প্রতিনিধিত্ব বাড়েনি, কবে নাগাদ সরকার এটি বাস্তবায়ন করবে, এসব খতিয়ে দেখতে হবে।



 ইসরাত জাহান সোনালী

বিভিন্ন সংগঠনের উন্নয়নকর্মীর মাধ্যমে নারীর অধিকার নিয়ে কথা বলা শুরু করি। তারা নারীর ক্ষমতায়নের জন্য নারীর অর্থনৈতিক মুক্তির কথা আগে বলছেন। এসব সংগঠনের মাধ্যমে শুধু সেলাই প্রশিক্ষণই না, বিজনেস ম্যানেজমেন্ট থেকে শুরু করে ক্যাটারিং, মোবাইল সার্ভিসিংসহ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সব প্রশিক্ষণ নিয়েছি। স্কুলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নারীর আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থা করেছি। নারীর জন্য আলাদা কক্ষের ব্যবস্থা করেছি। নারী উন্নয়ন ফোরামের মাধ্যমে নানান উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। সর্বোপরি কথা হচ্ছে, দেশের সংবিধান অনুযায়ী নারীদের রাজনৈতিক অঙ্গনে ও জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে ৩৩ শতাংশ নারীকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। নারীকে সরাসরি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে নারীর জন্য বরাদ্দ বাড়াতে হবে। এ ছাড়া নারী সংরক্ষণ আসন বাড়াতে হবে। এর সঙ্গে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্যদের এলাকায় জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে হবে।



নীলুফা ইয়াসমিন

বরিশাল অঞ্চলের অধিকাংশ নারী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষির সঙ্গে সম্পৃক্ত। যেসব নারী রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাঁরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী নন। নারী যতদিন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হবেন না, ততদিন নারীর ক্ষমতায়ন সম্ভব না। প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারীরা কৃষি খাত থেকে শুরু করে বিভিন্ন কুটিরশিল্পের জন্য এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে কাজ করে। তাদের মধ্যে সুপ্ত অবস্থায় অনেক প্রতিভা আছে, তারা নিজেদের বিকশিত করবে কখন। তারা সকাল থেকে রাতে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত বাইরের কোনো স্বপ্ন দেখে না। তাদের মাথার মধ্যে একটাই দুঃস্বপ্ন থাকে, সকাল থেকে কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে হবে। এসব নারীর ভাগ্যের উন্নয়নে সরকারের পক্ষ থেকে স্বল্প সুদে কৃষি ও কুটিরশিল্প ঋণ দিতে হবে। এভাবে তারা ঋণ শোধ করে নিজেদের স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে যাবে। অর্থনৈতিক মুক্তির মাধ্যমে তারা রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে নারীর ক্ষমতায়নে ভূমিকা রাখবে।



আফসানা জেসমিন পপি

২০১১ সাল থেকে আমি দু’বার ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্য নির্বাচিত হই। সর্বশেষ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যানের চেয়ে ২০ হাজার বেশি ভোট পেয়ে আমি নির্বাচিত হই। ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য থাকার সময় ভাবতাম উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের পদে হয়তো বেশি ক্ষমতা। কিন্তু উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর দেখি এখানেও নারীরা বঞ্চিত। এখন প্রশ্ন জাগে, কেন নারী ভাইস চেয়ারম্যানের পদটা সৃষ্টি করা হয়েছে? ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচনের আগে প্রতিটি ওয়ার্ড-ইউনিয়ন ঘুরেছি। সে সময় জনগণের কাছে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। কিন্তু চার বছর পরও সে সবের কোনো কিছুই পূরণ করতে পারিনি। আসলে এখন পর্যন্ত আমরা স্বাক্ষর করার ক্ষমতা অর্জন করতে পারি নাই।



বিলকিস বেগম

নারীর অধিকার আদায়ে অপরাজিতারা কাজ করে আসছে। ইউনিয়ন পরিষদে নারী সদস্যদের নেতৃত্বাধীন বিভিন্ন স্থায়ী কমিটির কার্যক্রম প্রায় বন্ধ ছিল। অপরাজিতাদের সচেতনতার মাধ্যমে এসব স্থায়ী কমিটির কার্যক্রম চালু করা হয়। সভা সেমিনারের মাধ্যমে তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা হয়। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পরে সব ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্যদের নিয়ে একটি সভা আহ্বান করি। সেখানে একটি ইউনিয়ন পরিষদের কোনো সদস্য উপস্থিত হননি। কারণ অপরাজিতা পরিচয়ের নারী সদস্যরা সচেতন হওয়ার ফলে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানরা তাদের মনমতো কাজ করতে পারতেন না। তাই তাঁরা নারী সদস্যদের সভায় আসতে প্রথমেই বাধা দেন। পরে এ বাধা আমরা অতিক্রম করি। আমি একজন স্কুলশিক্ষিকা। আমার পরিবারের সহযোগিতার কারণে আমি রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। যোগ্যতার পরিচয় দিতে নারীকে পদে পদে বাধার সম্মুখীন হতে হয়।



ফারজানা ফেরদৌস নিশা

মেয়েশিশু জন্মের পর পরিবারের সদস্যরা যতটা খুশি হন, ছেলেশিশু সন্তান জন্ম নিলে তার চেয়ে বেশি খুশি হন। নারীর এ বৈষম্য জন্মের পর থেকে শুরু হয়। নারী ভাইস চেয়ারম্যান হওয়ায় আমার প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারীদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়েছে। তাঁরা কী কী কাজ পারেন, সেটা তাঁদের জিজ্ঞেস করলে তাঁরা উত্তর দেন তাঁরা কিছুই পারেন না। আসলেই কি তাঁরা কিছুই পারেন না? নারী সকালে ঘুম থেকে উঠে বাচ্চা সামলানোসহ সব কাজ করেন। কিন্তু নারী বলে তাঁদের দূরে ঠেলে দেওয়া হয়। যেমন, আমার উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে আমি সভাপতি প্রার্থী হই। তখন আমাকে সিনিয়র নেতারা প্রশ্ন করেন আমি পারব কিনা। আমি আমার শিক্ষাগত ও রাজনৈতিক যোগ্যতার কথা বলি। কিন্তু তাঁরা ৮৫ বছর বয়স্ক একজনের ওপরই ভরসা রাখেন। একজন নারী বলেই সেদিন আমাকে দূরে রাখা হয়। নারীদের রাজনৈতিক দলের পদে সবসময় নারী সম্পাদক পদে রাখা হয়। নারীদের নির্বাহী পদে অধিষ্ঠিত না করলে নারীর ক্ষমতায়ন সম্ভব নয়।



ওয়াহিদা বানু

নারীকে রাজপথে আসতে হলে মেঠোপথ ধরে আসতে হবে। মেঠোপথ বা তৃণমূলে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের শক্তিমত্তা ও সাহস অনেক বেশি। তাই তাঁদের তৃণমূলের মধ্যে সচেতনতা আর অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দেশের সংবিধান অনুযায়ী ‎২০২০ সালের মধ্যে রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৩৩ শতাংশ নারী রাখার বাধ্যবাধকতা ছিল। কিন্তু তারা এ সময়ের মধ্যেও তা পারেনি। রাজনৈতিক দলগুলোর মেনিফেস্টোর মধ্যে তারা নারীর ক্ষমতায়নের কথা বললেও সে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেনি। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও নারীদের শুধু গৃহপালিত পশু পালন আর ক্ষুদ্রশিল্প করার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু ডিজিটাল আর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হবে। আর নির্যাতিত হলে নারীদের প্রতিবাদ করতে হবে, কোনো ছাড় দেওয়ার মানসিকতা রাখা যাবে না। নারীদের উচ্চশিক্ষার জন্য নিজেদেরই এগিয়ে আসতে হবে। পুরুষতান্ত্রিকতার বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।  


অ্যাডভোকেট রোকসানা খন্দকার

১৯৯৩ সাল থেকে তৃণমূল পর্যায়ে নারীদের নিয়ে কাজ করছি। সময়ের সঙ্গে অনেক বাধার মধ্যে আমরা এগিয়ে গেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত নারীকে বিভিন্ন অজুহাতে পিছিয়ে রাখা হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর নারী প্রার্থী খুঁজে না পাওয়া, তারা পরাজিত হবে বা নির্বাচনের খরচ জোগাতে পারবে না এ অজুহাতে নমিনেশন দিচ্ছে না। কিন্তু তাদের এ অজুহাত সবক’টিই ভুল। আমাদের দেশে অনেক যোগ্য নারী আছে। রাজনৈতিক সদিচ্ছার মাধ্যমে তাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ৩৩ শতাংশ আসনে নারীদের মনোনয়ন দিতে হবে।




শেখ রোকন

পুরুষদের মানুষ হিসেবে যে মহিমা মনুষ্যত্বের মহিমা ততক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে না। সমকাল সবসময় নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলে, সমকালের সম্পাদকীয় নীতিরও এটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। যেখানে নারী নির্যাতন ও বৈষম্যের ঘটনা ঘটুক, সেখানে আমরা সাংবাদিকতার ধ্রুপদি মাত্রার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেই। আশা করি, নারীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের মাধ্যমে সমাজ ও দেশ এগিয়ে যাবে।




আলোচনার এ পর্যায়ে ‘অপরাজিতা’দের মধ্য থেকে বেশ কয়েকজন প্রতিনিধি তাঁদের অর্জন, চলমান বিভিন্ন বাধা, সেগুলো মোকাবিলায় তাঁরা কী করছেন এবং এক্ষেত্রে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ তথা নীতিনির্ধারকদের কাছ থেকে তাঁরা কী ধরনের সহযোগিতা আশা করেন, ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরেন। অপরাজিতাদের মধ্যে বরিশালের বাকেরগঞ্জের তরুণ নারী সমাজকর্মী তাহমিনা আক্তার;  সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার একটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সংরক্ষিত আসনের নির্বাচিত সদস্য মাজেদা বেগম; নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার একটি ইউপির সংরক্ষিত আসনের সদস্য রুমানা আক্তার; কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ‘অপরাজিতা’ বদরুন নাহার; খুলনার রূপসা উপজেলার একটি ইউপির সাধারণ আসনে নির্বাচিত সদস্য আকলিমা খাতুন তুলি এবং খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার সংরক্ষিত আসনের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বুলু রায় গাঙ্গুলী বক্তব্য দেন। তাঁরা বলেন, অপরাজিতারা ইউনিয়ন পরিষদে নারী সদস্যদের নেতৃত্বাধীন স্থায়ী কমিটিকে সক্রিয় করে নারীদের স্বার্থ ও অধিকার-সংশ্লিষ্ট বিষয় উত্থাপনের সঙ্গে পরিষদের নারী বাজেট বাড়াতে কাজ করছেন। ইউপি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে নির্বাচিত হচ্ছেন তাঁদের অনেকে এবং সর্বশেষ ইউনিয়ন পরিষদে অপরাজিতা কর্ম এলাকায় মোট ১১ জন নারী প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন,  এ ক্ষেত্রে ইউনিয়ন সংখ্যার অনুপাতে অপরাজিতা কর্ম এলাকায় সাফল্যের হার দেশের অন্যান্য জায়গার তুলনায় দ্বিগুণ। স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বসে দলগুলোতে নারীর অন্তর্ভুক্তিতেও কাজ করছেন অপরাজিতারা। তবে তাঁরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাধারও সম্মুখীন হচ্ছেন। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুসারে রাজনৈতিক দলগুলোর সকল স্তরের বিভিন্ন কমিটিতে ন্যূনতম ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব রাখার কথা থাকলেও বাস্তব অন্তর্ভুক্তির হার এখনও অনেক কম। একইভাবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে নারীর দলীয় মনোনয়নের হারও অনেক কম। সংরক্ষিত আসনে নির্বাচিত নারী জনপ্রতিনিধি অনেকে মূলত অলংকার হিসেবে গণ্য হচ্ছেন। ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে নারীরা নির্বাচন করতে যথাযথ সমর্থন ও সহায়তা পান না। তবে এমন নানা বাধার পরেও অপরাজিতারা হার না মানার মনোভাব নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।

স্বাগত বক্তব্য ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন

ওয়াজেদ ফিরোজ
নির্বাহী পরিচালক, ডেমক্রেসিওয়াচ

আলোচক

শিরীন আখতার, এমপি
সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল

আরমা দত্ত
সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগ

সেলিমা রহমান
সদস্য, জাতীয় স্থায়ী কমিটি, বিএনপি

অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভুঁইয়া
প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব
জাতীয় পার্টি

অধ্যাপক সাদেকা হালিম
সদস্য, জাতীয় উপদেষ্টা পরিষদ, আওয়ামী লীগ

লায়লা বানু
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
চিরিরবন্দর, দিনাজপুর

সুলতানা আক্তার
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান, মোমেনপুর, রংপুর সদর এবং জাতীয় পার্টির জেলা নেত্রী, রংপুর

পারভীন আকতার
সংরক্ষিত আসনের সদস্য, জেলা পরিষদ নওগাঁ
সভাপতি, মহিলা আওয়ামী লীগ, নওগাঁ

ইসরাত জাহান সোনালী
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, ঝালকাঠি
সদর উপজেলা
 সভাপতি, মহিলা আওয়ামী লীগ, ঝালকাঠি

নীলুফা ইয়াসমিন
সভাপতি, মহিলা পরিষদ ও সদস্য
আহ্বায়ক কমিটি, বিএনপি, নেছারাবাদ, পিরোজপুর

আফসানা জেসমিন পপি
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, রামু
 সভাপতি, মহিলা আওয়ামী লীগ, কক্সবাজার

বিলকিস বেগম
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, কমলগঞ্জ
সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, কমলগঞ্জ, মৌলভীবাজার

ফারজানা ফেরদৌস নিশা
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, ফুলতলা
এবং নির্বাহী সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগ, খুলনা

ওয়াহিদা বানু
নির্বাহী পরিচালক, অপরাজেয় বাংলাদেশ

ধন্যবাদ জ্ঞাপন

অ্যাডভোকেট রোকসানা খন্দকার
নির্বাহী পরিচালক, খান ফাউন্ডেশন

সঞ্চালনা
শেখ রোকন
সহযোগী সম্পাদক, সমকাল

অনুলিখন
লতিফুল ইসলাম
নিজস্ব প্রতিবেদক, সমকাল

সমন্বয়
হাসান জাকির
হেড অব ইভেন্টস, সমকাল