ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে হামলা মেনে নেওয়া যায় না: ড. কামাল

বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে হামলা মেনে নেওয়া যায় না: ড. কামাল

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ড. কামাল হোসেন— সমকাল

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮ | ১৩:২৫ | আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮ | ১৩:৩৫

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, 'শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে হামলা ঘটনা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। সেখানে এই ধরনের ঘটনা... আমাদের প্রতি কী হয়েছে সেটা চিন্তা করি না, কিন্তু তারা শহীদদের অবমাননা করেছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না, এটা সারাদেশের কোটি কোটি মানুষ মেনে নিতে পারে না।'

রাজধানীর পুরানা পল্টনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কার্যালয়ে শুক্রবার বিকালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

পুলিশ প্রধানকে উদ্দেশ্য করে ড. কামাল বলেন, 'আইজিপির কাছে লিখিত চিঠি পাঠাবো। তাকে অনুরোধ করবো আপনি কথাগুলোকে খুব গুরত্ব সহকারে দেখবেন। আপনাদেরকে যে তথ্য দেওয়া হবে আপনি বিশ্বস্ত লোক দিয়ে তদন্ত করাবেন। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সম্মানে এই তদন্তকে পুরোভাবে সাহায্য করবো।'

আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, 'কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আপনারা বেআইনি আদেশ মানবেন না। যারা ক্ষমতায় আছেন তারা আর ১৫ দিন আছেন। তাই এসব (গ্রেফতার) আদেশ মানা বন্ধ করুন।'

পুলিশের উদ্দেশে ড. কামাল হোসেন বলেন, 'যারা বেআইনি আদেশ দিচ্ছে এরা চিরস্থায়ী কেউ নয়। যে লোক আইন ভঙ্গ করছে না তাকে গ্রেপ্তার করা মানে হচ্ছে- সংবিধান ভঙ্গ করা। তোমাদের শুভাকাঙ্খি হিসেবে বলছি তোমরা সংবিধান ভঙ্গ করার অপরাধ করিও না।'

যারা 'বেআইনি' আদেশ দিচ্ছে তাদের দেশের মানুষ চিহ্নিত করে আগামীতে বিচার করবে বলেও জানান ড. কামাল হোসেন।

এসময়ে দৃঢ় কণ্ঠ তিনি বলেন, 'এই সরকার ১৫/১৬ দিন ক্ষমতায় আছে। তাদেরকে বলবো, বেআইনি আদেশ দেওয়া বন্ধ করুন, আপনারা আইন মেনে চলুন। সরকার আইনের ঊর্ধ্বে না। এটা হলো স্বাধীনতার অর্থ।'

নির্বাচনের প্রচারাভিযান শুরুর পর বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের প্রসঙ্গে সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন বলেন, 'দেশে এখনো সংবিধান আছে, যে সংবিধানে বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষর এক নম্বর। উনি লিখে দিয়ে গেছেন এদেশের মানুষ আইনের আশ্রয় পাবে। পুলিশ আজকে যেটা করেছে এটা বঙ্গবন্ধুর কথাকে অমান্য করেছে। বঙ্গবন্ধু যেটাকে বলেছে হবে তোমরা সেটাকে অমান্য করেছো।'

হামলার ঘটনা পরিকল্পিত দাবি করে জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, 'ওরা ভেবেছে ভয় দেখিয়ে তাদেরকে নির্বাচনের বাইরে রাখবে। সেজন্য আজকে এই হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। কতগুলো ছেলেকে আহত করেছে। এই হামলা পরিকল্পিত।'

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, 'বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা জানাতে যাবো, সেখানে আক্রমণ করা হবে এটা অবিশ্বাস্য। এই অবিশ্বাস্য কাজগুলো সরকার ও তার দলের লোকেরা কেন করছে এটা সকলের বোধগম্য। কারণ এতো খুন-গুম, এতো দুর্নীতি-লুটপাট করেছে যে, তারা ক্ষমতা ছাড়তে ভয় পায়। নির্বাচন কমিশন একটা ঠুঁটো জগন্নাথের মতো হয়ে আছে। কিছুই করেন না সিইসি। তিনি মিন মিন করে বলেন আমরা বিব্রত।'

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জেএসডির আবদুল মালেক রতন, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, মোস্তফা মহসিন মন্টু, রেজা কিবরিয়া, জগলুল হায়দার আফ্রিক, আওম শফিকউল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন

×