
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় যে সময় আঞ্চলিক উপন্যাস রচনায় অগ্রসর হন, সেই সময় বাংলা সাহিত্যে গ্রামীণ জীবন কেন্দ্র করে আধুনিক উপন্যাস রচনায় কিছুটা ভাটা পড়েছিল। এই পরিস্থিতিতে তারাশঙ্কর সারাজীবন পরিচিত ভূখে র জনজীবন থেকেই নিজের উপন্যাসের উপাদান সংগ্রহ করে গিয়েছেন। ক্ষেত্রবিশেষে তাঁর উপন্যাসে কল্পনার অবকাশ থাকলেও এগুলো প্রধানত বাস্তব জীবন ও সমাজচিত্রের আধারে গড়ে উঠেছে। এই কারণে গবেষক সুরেশচন্দ্র মৈত্র লিখেছেন, তারাশঙ্কর হলেন 'রাঢ়ের অকৃত্রিম একনিষ্ঠ শিল্পী; চ ীদাসের পর বাংলা সাহিত্যে রাঢ়ের এত বড় নাগরিক দেখা দেননি। রাঢ়ই তাঁর পৃথিবী, বসুন্ধরা। তারাশঙ্কর রাঢ়ের আদিম প্রকৃতির আধুনিক প্রতিভূ।' কথাসাহিত্যে নানামাত্রিক বিচরণ থাকলেও তারাশঙ্কর মূলত ঔপন্যাসিক। তাঁর রচিত উপন্যাসের সংখ্যা প্রায় ৬০। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক অরুণকুমার মুখোপাধ্যায় তারাশঙ্করের উপন্যাসগুলোকে সময়কাল অনুযায়ী পাঁচটি পর্বে ভাগ করেছেন :
প্রথম পর্ব : চৈতালী ঘূর্ণি থেকে আগুন [১৯৩১ থেকে ১৯৩৭]
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম উপন্যাস চৈতালী ঘূর্ণি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় ১৯৩২ সালে। তাঁর প্রথম পর্বের অন্য উপন্যাসগুলো হলো- পাষাণপুরী, নীলকণ্ঠ, রাইকমল, প্রেম ও প্রয়োজন ও আগুন। তারাশঙ্করের প্রথম উপন্যাস চৈতালী ঘূর্ণি সম্পর্কে প্রেমেন্দ্র মিত্র লিখেছিলেন, 'তারাশঙ্কর সাহিত্যজীবনে রাঢ়ের গ্রামাঞ্চল নিয়ে বহু সার্থক ও সুবৃহৎ উপন্যাস লিখেছেন। কিন্তু সে সমস্ত উপন্যাসের প্রায় তাবৎ উপাদানই বীজাকারে যেন তুলনায় নিতান্ত ক্ষুদ্রাকার 'চৈতালী ঘূর্ণি'র মধ্যেই সঞ্চিত।"
দ্বিতীয় পর্ব : ধাত্রীদেবতা থেকে ঝড় ও ঝরাপাতা [১৯৪৭ থেকে ১৯৫৮]
তারাশঙ্করের উপন্যাস রচনার দ্বিতীয় পর্বে প্রকাশিত উপন্যাসগুলো হলো- ধাত্রীদেবতা, কালিন্দী, গণদেবতা, মন্বন্তর, পঞ্চগ্রাম, কবি, সন্দীপন পাঠশালা, অভিযান ও ঝড় ও ঝরাপাতা।
তৃতীয় পর্ব : হাঁসুলী বাঁকের উপকথা থেকে ডাকহরকরা [১৯৪৭ থেকে ১৯৫৮]
তৃতীয় পর্বে এসে তারাশঙ্করের উপন্যাসগুলো এক নতুন মোড় নিয়েছে। এই পর্বের উপন্যাসগুলো হলো- পদচিহ্ন, উত্তরায়ণ, হাঁসুলী বাঁকের উপকথা, তামস তপস্যা, নাগিনী কন্যার কাহিনী, আরোগ্য নিকেতন, চাঁপাডাঙার বৌ, পঞ্চপুত্তলি, বিচারক, সপ্তপদী, বিপাশা, রাধা, মানুষের মন ও ডাকহরকরা।
চতুর্থ পর্ব : মহাশ্বেতা থেকে কীর্তিহাটের কড়চা [১৯৬০ থেকে ১৯৬৭]
এই পর্বের উপন্যাসগুলো হলো- মহাশ্বেতা, যোগভ্রষ্ট, না, নাগরিক, নিশিপদ্ম, যতিভঙ্গ, কান্না, কালবৈশাখী, একটি চড়ূই পাখি ও কালো মেয়ে, জঙ্গলগড়, মঞ্জরী অপেরা, সংকেত, ভুবনপুরের হাট, বসন্তরাগ, স্বর্গমর্ত্য, বিচিত্রা, গন্না বেগম, অরণ্যবহ্নি, হীরাপান্না, মহানগরী, গুরুদক্ষিণা, শুকসারি কথা, কীর্তিহাটের কড়চা ও শক্করীবাঈ। এই পর্বের উপন্যাসে তারাশঙ্কর জনজীবনের চিত্রণ ছেড়ে আকৃষ্ট হয়েছেন নিয়তির খেলা ও অধ্যাত্মবাদের প্রতি।
পঞ্চম পর্ব : মণিবৌদি থেকে নবদিগন্ত [১৯৬৭ থেকে ১৯৭১]
তারাশঙ্করের উপন্যাস রচনার সর্বশেষ এই পর্বের উপন্যাসগুলো হলো- মণিবৌদি, ছায়াপথ, কালরাত্রি, রূপসী বিহঙ্গিনী, অভিনেত্রী, ফরিয়াদ, সুতপার তপস্যা ও একটি কালো মেয়ে, নবদিগন্ত। এই পর্বে তারাশঙ্কর উপন্যাস রচনার প্রচলিত রীতিটিকে ভেঙেছেন। মণিবৌদি, অভিনেত্রী, ফরিয়াদ, একটি কালো মেয়ে ও সুতপার তপস্যা উপন্যাসে ঘটনার বিন্যাসে কথকতার পারম্পর্য রক্ষিত হয়নি। লেখকের বক্তব্য ও চরিত্রের কথা সমান্তরালভাবে এসেছে এবং তার সঙ্গে মিশে গেছে আখ্যানভাগ।
প্রশ্ন
১। তারাশঙ্কর কোন উপন্যাসের জন্য জ্ঞানপীঠ পুরস্কার অর্জন করেন?
২। তারাশঙ্করের তিন কন্যার নাম কী?
৩। 'কবি' উপন্যাসটি কত সালে প্রকাশিত হয়?
কুইজ ৫৬-এর উত্তর
১। বামাসুন্দরী দেবী
২। তাঁর নাম জানা যায়নি
৩। নীতিকাব্য
কুইজ ৫৬-এর জয়ী
রাজিব রায়
আরমানিটোলা, ঢাকা
মাহমুদুর রহমান
জিন্দাবাজার, সিলেট
নিয়ম
পাঠক, কুইজে অংশ নিতে আপনার উত্তর পাঠিয়ে দিন ৬ জুন সোমবারের মধ্যে কালের খেয়ার ঠিকানায়। পরবর্তী কুইজে প্রথম তিন বিজয়ীর নাম প্রকাশ করা হবে। বিজয়ীর ঠিকানায় পৌঁছে যাবে পুরস্কার।
প্রথম পর্ব : চৈতালী ঘূর্ণি থেকে আগুন [১৯৩১ থেকে ১৯৩৭]
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম উপন্যাস চৈতালী ঘূর্ণি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় ১৯৩২ সালে। তাঁর প্রথম পর্বের অন্য উপন্যাসগুলো হলো- পাষাণপুরী, নীলকণ্ঠ, রাইকমল, প্রেম ও প্রয়োজন ও আগুন। তারাশঙ্করের প্রথম উপন্যাস চৈতালী ঘূর্ণি সম্পর্কে প্রেমেন্দ্র মিত্র লিখেছিলেন, 'তারাশঙ্কর সাহিত্যজীবনে রাঢ়ের গ্রামাঞ্চল নিয়ে বহু সার্থক ও সুবৃহৎ উপন্যাস লিখেছেন। কিন্তু সে সমস্ত উপন্যাসের প্রায় তাবৎ উপাদানই বীজাকারে যেন তুলনায় নিতান্ত ক্ষুদ্রাকার 'চৈতালী ঘূর্ণি'র মধ্যেই সঞ্চিত।"
দ্বিতীয় পর্ব : ধাত্রীদেবতা থেকে ঝড় ও ঝরাপাতা [১৯৪৭ থেকে ১৯৫৮]
তারাশঙ্করের উপন্যাস রচনার দ্বিতীয় পর্বে প্রকাশিত উপন্যাসগুলো হলো- ধাত্রীদেবতা, কালিন্দী, গণদেবতা, মন্বন্তর, পঞ্চগ্রাম, কবি, সন্দীপন পাঠশালা, অভিযান ও ঝড় ও ঝরাপাতা।
তৃতীয় পর্ব : হাঁসুলী বাঁকের উপকথা থেকে ডাকহরকরা [১৯৪৭ থেকে ১৯৫৮]
তৃতীয় পর্বে এসে তারাশঙ্করের উপন্যাসগুলো এক নতুন মোড় নিয়েছে। এই পর্বের উপন্যাসগুলো হলো- পদচিহ্ন, উত্তরায়ণ, হাঁসুলী বাঁকের উপকথা, তামস তপস্যা, নাগিনী কন্যার কাহিনী, আরোগ্য নিকেতন, চাঁপাডাঙার বৌ, পঞ্চপুত্তলি, বিচারক, সপ্তপদী, বিপাশা, রাধা, মানুষের মন ও ডাকহরকরা।
চতুর্থ পর্ব : মহাশ্বেতা থেকে কীর্তিহাটের কড়চা [১৯৬০ থেকে ১৯৬৭]
এই পর্বের উপন্যাসগুলো হলো- মহাশ্বেতা, যোগভ্রষ্ট, না, নাগরিক, নিশিপদ্ম, যতিভঙ্গ, কান্না, কালবৈশাখী, একটি চড়ূই পাখি ও কালো মেয়ে, জঙ্গলগড়, মঞ্জরী অপেরা, সংকেত, ভুবনপুরের হাট, বসন্তরাগ, স্বর্গমর্ত্য, বিচিত্রা, গন্না বেগম, অরণ্যবহ্নি, হীরাপান্না, মহানগরী, গুরুদক্ষিণা, শুকসারি কথা, কীর্তিহাটের কড়চা ও শক্করীবাঈ। এই পর্বের উপন্যাসে তারাশঙ্কর জনজীবনের চিত্রণ ছেড়ে আকৃষ্ট হয়েছেন নিয়তির খেলা ও অধ্যাত্মবাদের প্রতি।
পঞ্চম পর্ব : মণিবৌদি থেকে নবদিগন্ত [১৯৬৭ থেকে ১৯৭১]
তারাশঙ্করের উপন্যাস রচনার সর্বশেষ এই পর্বের উপন্যাসগুলো হলো- মণিবৌদি, ছায়াপথ, কালরাত্রি, রূপসী বিহঙ্গিনী, অভিনেত্রী, ফরিয়াদ, সুতপার তপস্যা ও একটি কালো মেয়ে, নবদিগন্ত। এই পর্বে তারাশঙ্কর উপন্যাস রচনার প্রচলিত রীতিটিকে ভেঙেছেন। মণিবৌদি, অভিনেত্রী, ফরিয়াদ, একটি কালো মেয়ে ও সুতপার তপস্যা উপন্যাসে ঘটনার বিন্যাসে কথকতার পারম্পর্য রক্ষিত হয়নি। লেখকের বক্তব্য ও চরিত্রের কথা সমান্তরালভাবে এসেছে এবং তার সঙ্গে মিশে গেছে আখ্যানভাগ।
প্রশ্ন
১। তারাশঙ্কর কোন উপন্যাসের জন্য জ্ঞানপীঠ পুরস্কার অর্জন করেন?
২। তারাশঙ্করের তিন কন্যার নাম কী?
৩। 'কবি' উপন্যাসটি কত সালে প্রকাশিত হয়?
কুইজ ৫৬-এর উত্তর
১। বামাসুন্দরী দেবী
২। তাঁর নাম জানা যায়নি
৩। নীতিকাব্য
কুইজ ৫৬-এর জয়ী
রাজিব রায়
আরমানিটোলা, ঢাকা
মাহমুদুর রহমান
জিন্দাবাজার, সিলেট
নিয়ম
পাঠক, কুইজে অংশ নিতে আপনার উত্তর পাঠিয়ে দিন ৬ জুন সোমবারের মধ্যে কালের খেয়ার ঠিকানায়। পরবর্তী কুইজে প্রথম তিন বিজয়ীর নাম প্রকাশ করা হবে। বিজয়ীর ঠিকানায় পৌঁছে যাবে পুরস্কার।
মন্তব্য করুন