মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম সিপিবির সাবেক সভাপতি, স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) প্রথম সহসভাপতি (ভিপি)। আইয়ুব খানের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে ১৯৬৬ সালে ১৮ বছর বয়সে তিনি প্রথম কারাবরণ করেন। একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সেলিম সমকালের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, এ দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং গণতন্ত্র ও নির্বাচনের ভবিষ্যৎ নিয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাব্বির নেওয়াজ

সমকাল: স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন শেষে আমরা ৫১ বছরে পা রাখলাম। যে চেতনা-আদর্শ লালন করে, যে প্রত্যাশা নিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল, তার কতটুকু অর্জিত হয়েছে বলে মনে করেন?

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম: আমি খুবই গর্ব অনুভব করি যে, একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম। মুক্তিযুদ্ধ কেবল ৯ মাসের একটি সশস্ত্র পর্ব নয়, অনেক অনেক বছর ধরে জনগণের ধারাবাহিক সংগ্রামের একবারে শীর্ষবিন্দু। জনগণের এই সশস্ত্র সংগ্রামের প্রেক্ষাপট গড়ে তুলতে হয়েছে। বিজয় লাভের পর সেই বিজয় ধরে সামনে অগ্রসর হওয়ার সুযোগ আমাদের সামনে এসেছে। এই ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে আমি জড়িত ছিলাম। মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি পর্বের বিবরণে আমি যাব না। আইয়ুব-বিরোধী আন্দোলন করে ব্যক্তিগতভাবে আমি নিজে ১৯৬৬ সালে জেল খেটেছি। তারপর নানা ঝড়ঝঞ্ঝা পেরিয়ে আমরা অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করলাম। যুদ্ধকালে আমরা বিভিন্ন এলাকাকে মুক্ত করতাম। মুক্ত এলাকায় চুরি, ছিনতাই, রাহাজানি, বাটপাড়ি কোনো কিছুই ছিল না। আমরা গান গাইতাম, 'একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি'। আমরা স্বপ্ন দেখতাম, ফুলের বাগানের মতো সুন্দর একটি দেশ আমাদের হবে। কেউ খাবে, কেউ খাবে না- তা হবে না। শ্রেণি শোষণ, শ্রেণি দ্বন্দ্বের ঊর্ধ্বে উঠে প্রত্যেক নাগরিক মর্যাদার সঙ্গে বাস করবে।

কয়েক বছর আগে আমরা বাম জোটের নেতারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলাম। সেখানে তাকে বলেছিলাম, আমাদের ফুলের বাগান তো এখন ক্যাসিনোর বাগানে পরিণত হয়েছে। দেশকে লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করা হয়েছে। আমাদের স্বপ্ন চুরমার করা হয়েছে। আমাদের ছিল ভিশন-৭১ মুক্তিযুদ্ধ। সেটার কবরের ওপরে দাঁড়িয়ে এখন ভিশন ২০৩০, ২০৪০ এসব নানা ভিশন দেওয়া হচ্ছে। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধ। সবচেয়ে কার্যকর জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৭১ সালে। আমাদের সংবিধানের প্রগতিশীল উপাদানের ওপর ভিত্তি করেই সেই ঐক্য তৈরি হয়েছিল। সেটিকে কবর দিয়ে আজকে শোষণ, বৈষম্য ও অনাচারে দেশকে ভরিয়ে তোলা হয়েছে। বাজার অর্থনীতির ধারায় দেশ চলছে। সবকিছুই কেনাবেচার সামগ্রী। এমনকি এমপিগিরিও কেনাবেচার সামগ্রী হয়ে গেছে। বাজার অর্থনীতি জন্ম দিয়েছে বাজার রাজনীতির। এই রকম সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য ৩০ লাখ মানুষ জীবন দেয়নি। সেই 'ভিশন ১৯৭১' পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করাই এখন সমগ্র জাতির সামনে ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে প্রধান কর্তব্য। আমি হতাশ নই। তবে আমি মর্মাহত এ কারণে যে, বিজয় অর্জন না করাটা খুবই বেদনার বিষয়, কিন্তু বিজয় অর্জন করার পর সেটা হাতছাড়া করার যে বেদনা, তার তুলনা করা যায় না। আমরা বীরের জাতি, বিজয় অর্জন করেছি। কিন্তু দুর্ভাগা জাতি অর্জিত বিজয় রক্ষা করতে পারেনি। একাত্তরে এমন হয়েছে। স্বৈরাচারী এরশাদের পতনের পর তা হয়েছে। সামনে আর এটা হতে দেওয়া যাবে না।

সমকাল: মুক্তিযুদ্ধে রণাঙ্গনের আপনি একজন অগ্রসেনা। মুক্তিযুদ্ধকালের কোন বিশেষ ঘটনা আপনার হৃদয়ে বারবার ভেসে ওঠে?

সেলিম:মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আমাদের আরও আলোচনা করা উচিত। এটা পর্যাপ্ত পরিমাণে হচ্ছে না বলে আমার ক্ষোভ রয়েছে। জনগণের সংগ্রামের, বিজয়ের যে ইতিহাস, তা মানুষের মন থেকে মুছে ফেলা হয়েছিল। আমাদের দেশে জেল হত্যাকাণ্ড বলতে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বরকে বোঝানো হয়। অথচ মানুষকে বলা হয় না, ওটা প্রথম জেল হত্যাকাণ্ড নয়। প্রথম জেল হত্যাকাণ্ড হয়েছিল ১৯৫০ সালে রাজশাহী জেলের খাপড়া ওয়ার্ডে। সেখানে গুলি চালিয়ে কমিউনিস্ট বন্ধুদের হত্যা করা হয়েছিল। শ্রমিক, কৃষক, ক্ষেতমজুর, ছাত্রসমাজ- সবার যে বীরত্বপূর্ণ সংগ্রাম, তার ধারাবাহিকতাতেই মুক্তিযুদ্ধের সশস্ত্র লড়াইপর্বের জন্ম হয়েছিল। ছাত্র ইউনিয়ন, ন্যাপ ও কমিউনিস্ট পার্টির গেরিলা বাহিনীতে আমরা স্বল্পকালীন হলেও বেশ উঁচুমানের প্রশিক্ষণ পেয়েছিলাম। আমি ছিলাম প্রথম গ্রুপের কমান্ডার। ভারতে প্রশিক্ষণে নিয়ে এসে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে দেশে অপারেশন শুরু করি আমরা। নভেম্বরে গিয়ে আমরা বুঝতে পারি, যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হবে না। তাই গেরিলা কৌশল বাদ দিয়ে ফ্রন্টাল যুদ্ধে নামি। আমার স্মৃতিতে উজ্জ্বল কুমিল্লার বেতিয়ারার শহীদরা। সেখানে ১১ নভেম্বর সম্মুখ সমরে আমার খুব প্রিয় কমরেড নিজামুদ্দিন আজাদ, কমরেড সিরাজুম মুনিরসহ ৯ জন গেরিলা শহীদ হন। সেই ট্র্যাজিক স্মৃতি মনে পড়ে খুব।

সমকাল: মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী দেশ গঠন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সে-সময়ে আপনাদের সম্পর্ক নিয়ে আপনার বক্তব্য কী? অনেকে বলেন, আপনারা কার্যকর বিরোধী দলের ভূমিকা না নেওয়ায় জায়গাটা অন্যদের ছেড়ে দেওয়া হলো। আপনিও তাই মনে করেন কি?

সেলিম: মুক্তিযুদ্ধের পর সঠিকভাবেই আমরা মূল রাজনৈতিক কর্তব্য হিসেবে স্বাধীনতাকে সুসংহত করার কাজে নামি। এটাই ছিল প্রধান কাজ। কিন্তু স্বাধীনতাকে সংহত করার মানে যে তৎকালীন সরকারকে অন্ধ সমর্থন দিয়ে যাওয়া বোঝায় না, তা নিয়ে আমাদের মধ্যে বিভ্রান্তি ঘটেছিল। সেই সময় দেশ গড়ার সংগ্রামে আমরা অবতীর্ণ ছিলাম। তখন স্বাধীনতাকে নস্যাৎ করার জন্য অন্তর্ঘাত ও নৈরাজ্য চালাতে এবং দেশকে অকার্যকর করতে দেশবিরোধী শক্তি সক্রিয় ছিল। সেটির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া ভুল ছিল না। কিন্তু এখানে আমরা একটা ভুল করেছি- একটা ঐতিহাসিক ভুল। এই কাজগুলো করার সময় আমাদের জনগণকে বলা উচিত ছিল, মুজিব সরকারকে যদি আপনাদের পছন্দ না হয়, তাহলে বিরোধী পক্ষে আমরা বামপন্থি কমিউনিস্ট শক্তি আছি, আমাদের আপনারা সমর্থন দিন। আমরা এই শেষ কাজটা পর্যাপ্ত মনোযোগ দিয়ে করিনি। তাই মানুষের ভেতর একটা ভুল ধারণা সৃষ্টি হলো যে, আমরা সব বিষয়ে আওয়ামী লীগ সরকারকে সমর্থন করে যাচ্ছি।

প্রসঙ্গক্রমে বলি, বঙ্গবন্ধু বলতেন, 'কোনো বাঙালি আমাকে গুলি করতে পারবে না। হাত কাঁপবে।' এটা প্রমাণ করে বঙ্গবন্ধু বাঙালিকে বুঝতেন। কিন্তু শ্রেণিশক্তি বুঝতেন না। তার মৃত্যু আমাদের দেশকে পিছিয়ে দিয়েছে।

সমকাল: পাকিস্তান আমলে জেল-জুলুম জরিমানা অত্যাচার সহ্য করেও কমিউনিস্টরা যে রাজনৈতিক শক্তি বজায় রাখতে পেরেছিল, স্বাধীনতা-পরবর্তী ৫০ বছরেও কেন সেই অবস্থায় আপনারা নেই?

সেলিম: এটা আংশিকভাবে সত্য। এই সময়কালে আমাদের অর্জন আছে, তার বিস্তারিত বিবরণে আমি যাব না। ক্ষেতমজুর আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে গেছে। তবে আপনার কথা আংশিক সত্য। তার কারণ হলো, বহুদিন পর্যন্ত আমাদের পার্টিতে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে কিছু করা যাবে- এই আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি ছিল। ৯০ দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর পার্টি থেকে একটি অংশ বাইরে বেরিয়ে গেল। তখন থেকে আমরা সেই পরনির্ভরতা থেকে বেরিয়ে এলাম। ইতিহাস কখনও সরলরেখায় এগোয় না। শামসুর রাহমানের ভাষায়, আমাদের এখন কৃষ্ণপক্ষ চলছে। কথা হলো, যারা পুঁজিবাদের ভিত্তিতে দেশ চালাতে চায় তাদের সুবিধা হলো, চলতি হাওয়া তাদের পক্ষে। আমাদের চলতি হাওয়ার বিপক্ষে লড়াই করে সামনে এগোতে হয়।

সমকাল: আপনারা প্রায়ই আনুপাতিক ভোটের পক্ষে কথা বলেন। এটি একটু ব্যাখ্যা করবেন কি?

সেলিম: বর্তমানে ব্যক্তিগতভাবে প্রার্থীরা ভোটে দাঁড়ান। প্রার্থী আসন থেকে জিতলেও দলের বিরুদ্ধে যেতে পারেন না। তাদের দায়বদ্ধতা তাই দলের প্রতি- নির্বাচনী এলাকার জনগণের প্রতি নয়। আমার দাবি হলো, ব্যক্তি নয়, রাজনৈতিক দল ভোটে দাঁড়াবে, তার মেনিফেস্টো জনগণের সামনে দেবে। প্রচারের খরচ ইসি দেবে। দলগুলো তাদের প্রার্থী তালিকা জনগণকে জানাবে। যে দল যত শতাংশ ভোট পাবে, আনুপাতিক হারে তারা তাদের প্রার্থী তালিকার ক্রমানুসারে আসন বণ্টন পাবে। প্রশ্ন উঠতে পারে, সংশ্নিষ্ট আসনের স্বার্থ কে দেখবে? আমাদের কথা হলো, সংসদ সদস্যরা স্থানীয় কোনো বিষয়ে নাক গলাবেন না। এটা স্থানীয় সরকারের কাজ। পৃথিবীর বহু দেশে এই ব্যবস্থা আছে। ইউরোপের বেশিরভাগ দেশেই এই ব্যবস্থা। এশিয়ায় নেপাল ও শ্রীলঙ্কাতে আংশিকভাবে এই পদ্ধতি কার্যকর।

সমকাল: সংবিধানের চার মূলনীতি মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ও স্বৈরশাসকরা নানাভাবে বিপর্যস্ত করেছে। '৭২-এর সংবিধানের মূল চার নীতি ফিরিয়ে এনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা সম্ভব বলে আপনি মনে করেন কিনা?

সেলিম: মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কোনো বায়বীয় ব্যাপার নয়। চার মূলনীতিতেই এই চেতনা প্রতিভাত। এটি পূর্ণাঙ্গ ও অখণ্ডভাবে মানতে হবে। দুটি নীতি মানলাম, আর দুটি মানলাম না- এমনটি হয় না। মুজিব সরকারের আমলেই দক্ষিণপন্থি একটি গোষ্ঠী মূলনীতি থেকে সরকারকে বিচ্যুত করার চেষ্টা করেছে। সামরিক ও স্বৈরশাসকরাও তা করেছে। ফলে দেশ উল্টোপথে যাত্রা শুরু করে। আধিপত্যবাদী শক্তি, দুর্নীতিবাজ সরকারি ও বেসরকারি আমলাও তাতে যুক্ত হয়েছে। বুর্জোয়া দলগুলোর দ্বারা '৭২-এর সংবিধানের চার মূলনীতি ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। আওয়ামী লীগ বা জোট গঠন করেও তা হবে না। বিএনপিকে দিয়ে তো সম্ভবই নয়। বর্তমান সরকার অর্থনৈতিক নীতি, দর্শনের ক্ষেত্রে জিয়া, এরশাদ ও খালেদার পথই অনুসরণ করছে।

সমকাল: ভোট, নির্বাচন ব্যবস্থা, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সব বিরোধী দল তাদের অবস্থান পরিস্কার করেছে। সিপিবি এখনও করেনি। আপনার বক্তব্য কী?

সেলিম: আইয়ুব আমলে আমরা ভোটের দাবিতে আন্দোলন করেছি, বলেছি এক ব্যক্তি এক ভোট। এরশাদের আমলে বলেছি, আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। ভোট এখন কাঙালের ধন, তা চুরি করা হয়। এটা অন্য কোনো ব্যাপার নয়, এর সঙ্গে অর্থনীতি জড়িত। আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় রাজনৈতিক ক্ষমতায় থাকলে, ক্ষমতার আশপাশে থাকলে লুটপাট করা যায়। অনেকে বলেন, বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে বড় ব্যবসা হলো এমপিগিরি ব্যবসা। এক দল ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে চায়। আরেক দল ভাবে, আর কত রোজা রাখব? এক নির্বাচনে ১৫৪ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হলো। আরেক নির্বাচনে মধ্যরাতের ভোট দেখলাম। ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় মৌলিক সামাজিক বিপ্লব দরকার।

মূল বিষয়টা হলো, কার অধীনে নির্বাচন হবে। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে দলীয় হস্তক্ষেপ হবেই। দলনিরপেক্ষ সরকার থাকলে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে। মানি, মাসল অ্যান্ড ম্যানিপুলেশনমুক্ত নির্বাচন হতে হবে।

সমকাল: স্বাধীনতার ৫০ বছর পর একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আগামী বাংলাদেশকে কেমন দেখতে চান?

সেলিম: যেই স্বপ্ন নিয়ে আমরা অস্ত্র হাতে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম, সেই ফুলের মতো বাংলাদেশ দেখতে চাই। যেখানে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ থাকবে না।

সমকাল: আপনাকে ধন্যবাদ।

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম: আপনাকেও।