সাশ্রয়ী মূল্যে করোনাভাইরাস শনাক্তের কিট তৈরি করেছে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর)। এই প্রথম দেশীয় কোনো সংস্থা করোনা শনাক্তের আরটিপিসিআর কিট তৈরি করল। এই কিট দিয়ে ডেল্টা, ওমিক্রনসহ বিভিন্ন ধরন শনাক্ত করা যাবে। সেই সক্ষমতা রয়েছে। এছাড়া বাণিজ্যিক কিটের চেয়ে অনেকাংশে মানের দিক থেকেও উন্নত এটি। এমনকি অন্যান্য দেশের তুলনায় দামও পড়বে অনেক কম।

রোববার রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবে প্রতিষ্ঠানটির মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

উদ্ভাবিত নতুন এই কিটের মাধ্যমে নামমাত্র খরচে সন্দেহজনক ব্যক্তি এই ভাইরাসে আক্রান্ত কি-না, জানা যাবে। বাজারে এলে একটি কিটের দাম পড়বে ২৫০ টাকা। দেশীয় এই কিট দিয়ে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টায় করোনার প্রাথমিক উপস্থিতি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

বিসিএসআইআর জানায়, বর্তমানে সরকারিভাবে যে কিট ব্যবহৃত হচ্ছে, তা অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ, প্রতিটি পরীক্ষায় ব্যয় হয় আনুমানিক তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত প্রায় এক কোটি ৩১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৬৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এই বিপুল সংখ্যক শনাক্তকরণ কিটের সম্পূর্ণটাই আমদানি করতে হয়, যা আমাদের দেশের অর্থনীতিতে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করছে।

প্রতিষ্ঠানটি জানায়, কভিডকালে সংকটময় মুহূর্তে দেশবাসী তথা কভিড রোগীদের সহায়তার জন্য বিসিএসআইআর-এর নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় একটি কিউআরটি-পিসিআর কিট ‘বিসিএসআইআর কভিড কিট’ উদ্ভাবিত হয়েছে, যা করোনাভাইরাস শনাক্তের জন্য একটি সহজ এবং সাশ্রয়ী পদ্ধতি। এই কিট অন্যান্য আমদানি করা কিটের তুলনায় বেশি কার্যকরী হবে। এর মাধ্যমে একেবারেই ন্যূনতম সংখ্যক ভাইরাসকেও শনাক্ত করা যাবে। ফলে রোগের উপসর্গ প্রকাশের আগেই ভাইরাসের উপস্থিতি জানা সম্ভব হবে।

ইতোমধ্যে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এই কিট উৎপাদনের অনুমোদন দিয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ মেডিকেল গবেষণা পরিষদ এই কিটের এথিক্যাল ক্লিয়ারেন্স দিয়েছে বলেও জানিয়েছে বিসিএসআইআর।