- বিনোদন
- হল মালিকরা 'কেয়ামত থেকে কেয়ামত' ছবিটি প্রথমে চালাতে চাননি
হল মালিকরা 'কেয়ামত থেকে কেয়ামত' ছবিটি প্রথমে চালাতে চাননি

ভিনি, ভিডি, ভিসি—এলাম, দেখলাম, জয় করলাম' কথা জুলিয়াস সিজারের। প্রয়াত নায়ক সালমান শাহ ও চিত্রনায়িকা মৌসুমীর বেলায় যেনো এমন কথাই খাটে। কারণ প্রথম ছবি 'কেয়ামত থেকে কেয়ামত' এ অভিনয় করেই তারকা হয়ে উঠেন তারা। এর পরের ইতিহাস তো সবার জানা। আজ এই 'কেয়ামত থেকে কেয়ামত' ছবির ৩০ বছর পূর্ণ করল।
বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের একটি মাইলফলক হয়ে আছে কেয়ামত থেকে কেয়ামত ছবিটি। মুক্তির ৩০ বছরে এসেও এ ছবির আবেদন যেন প্রথম দিনের মতো। সবাই এখনো ছবিটি নিয়ে কথা বলতে ভীষণ ভালোবাসেন, আনন্দ পান। আর কেয়ামত থেকে কেয়ামত ছবিটি দিনকে দিন ছবিপ্রেমীদের মনের কোণে আরও শক্তপোক্ত জায়গা করে নিচ্ছে।
১৯৯৩ সালের এই দিনে অর্থাৎ ২৫ মার্চ বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’। সোহানুর রহমান সোহানের এ ছবির মাধ্যমে দেশের চলচ্চিত্রপ্রেমী মানুষেরা পেয়েছিলেন দুটি নতুন মুখ—মৌসুমী ও সালমান শাহ। প্রথম ছবিতেই তাঁরা বাজিমাত করেন—অভিনয় দিয়ে মানুষের মনের মণিকোঠায় জায়গা করে নেন। ২৫ বছর আগে সালমান শাহ মারা যান। মৃত্যুর আগে ২৭টি ছবিতে অভিনয় করেন। সব কটি ছিল জনপ্রিয় এবং ব্যবসায়িকভাবে সফল। তবে এক তবে এক ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ দিয়ে সালমান শাহ মানুষের মনে থাকবেন বহুকাল।
অথচ ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ প্রথম দিকে সিনেমা হল মালিকরা নতুন নায়ক-নায়িকার ছবি বলে চালাতে চায়নি। কিন্তু পরে ছবিটি এক ইতিহাস সৃষ্টি করে। বয়স্ক নায়কদের ভার্সিটিপড়–য়া ছাত্র দেখতে দেখতে ক্লান্ত দর্শকরা দারুণ পছন্দ করে তরুণ সালমান-মৌসুমী জুটিকে।
ছবিটির নির্মাতা সোহানু রহমান সোনা বলেন, ছবির গুণেই ছবিটি আজও মানুষের হৃদয়ে দাগ কেটে আছে। ৩০ বছরে এসে কেউ আয়োজন করে আমার সিনেমার কথা স্মরণ করছেন, এটা তো অবশ্যই ভালো লাগার। আমাদের চলচ্চিত্রের জন্যও খুব ভালো দিক।
বলিউডের ছবি ‘কেয়ামত তক কেয়ামত’র অফিসিয়াল রিমেক ছিল এটি। পরিচালনা করেছেন সোহানুর রহমান। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আনন্দ মেলা তিনটি হিন্দি ছবি ‘সনম বেওয়াফা’, ‘দিল’ ও ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তক’-এর কপিরাইট নিয়ে সোহানুর রহমান সোহানকে যে কোনো একটির বাংলা রিমেক করতে বলে। সেই সময় উপযুক্ত নায়ক-নায়িকা পাচ্ছিলেন না বলে সম্পূর্ণ নতুন মুখ দিয়ে ছবিটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রথমে নায়িকা হিসেবে মৌসুমীকে নির্বাচিত করা হয়। নায়ক হিসেবে তৌকীর আহমেদকে প্রস্তাব দিলে তিনি রিমেক চলচ্চিত্র হওয়ায় প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। পরে মডেল-অভিনেতা আদিল হোসেন নোবেলকে প্রস্তাব দিলে তিনিও তা ফিরিয়ে দেন। তখন নায়ক আলমগীরের সাবেক স্ত্রী খোশনুর আলমগীর ‘ইমন’ নামের একটি ছেলের সন্ধান দেন। প্রথম দেখাতেই তাকে পছন্দ করে ফেলেন পরিচালক এবং ‘সনম বেওয়াফা’ ছবির জন্য প্রস্তাব দেন। কিন্তু যখন ইমন ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তক’ ছবির কথা জানতে পারেন তখন তিনি এই ছবিতে অভিনয়ের জন্যই আগ্রহ প্রকাশ করেন। তার কাছে ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তক’ ছবি এতই প্রিয় ছিল যে, তিনি মোট ২৬ বার ছবিটি দেখেছেন বলে পরিচালককে জানান। শেষ পর্যন্ত পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান তাকে নিয়ে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবিটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন এবং নায়কের ‘ইমন’ নাম পরিবর্তন করে সালমান শাহ রাখেন। এটিও একটি ইতিহাস।
মন্তব্য করুন