ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপে সরকারের সমালোচনা করার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে পুলিশে সোপর্দ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন।

বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ওই শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে শাহবাগ থানায় দেওয়া হয়। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর নাম মেফতাহুল মারুফ। তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী।

জানা যায়, ২০০৫ সালের সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে চলতি মাসের ১৭ আগস্ট ছাত্রলীগের সমাবেশ ও মিছিলের ফলে রাস্তায় যানজটে পথচারীদের ভোগান্তি, ছাত্রলীগের ঘন ঘন কর্মসূচিতে হলের শিক্ষার্থীদের জোর করে নিয়ে যাওয়া- এসব বিষয়ে ব্যাচের মেসেঞ্জার গ্রুপ ‘চৌদ্দশিখা’তে আলাপ চলছিল। আলাপচলাকালীন ভুক্তভোগীর একটি মেসেজের ভিত্তিতে তাকে হল প্রশাসন “রাষ্ট্রবিরোধী ও “জঙ্গি সংশ্লিষ্ট” কাজে জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তাদের মেসেঞ্জার গ্রুপে লেখেন, ‘সিরিজ বোমা হামলা চালাইছে জামায়াতুল মুজাহিদিন নামে একটা জঙ্গি সংগঠন বাংলা ভাইয়ের নেতৃত্বে। সেই সময় ক্ষমতায় ছিল বিএনপি-জামায়াত। এই ক্ষমতায় থাকার জন্য যদি দায়ী তারা হয় তাহলে গুলশানসহ সব জঙ্গী হামলার জন্য দায়ী আওয়ামী লীগ।’ তার এই মেসেজ প্রথমে হল ছাত্রলীগের হাতে আসলে তারা ওই শিক্ষার্থীকে প্রাধ্যক্ষের হাতে তুলে দেন। পরবর্তীতে প্রাধ্যক্ষ ওই শিক্ষার্থীকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করেন।

এ বিষয়ে জানতে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মোহাম্মাদ বিল্লাল হোসেন সমকালকে বলেন, ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আমরা রাষ্ট্র ও সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ড এবং জঙ্গী সম্পৃক্ততার প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের সহায়তায় তাকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার ঢাবির এক শিক্ষার্থীকে থানায় হস্তান্তর করার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘রাতে জিয়া হল কর্তৃপক্ষ রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার অভিযোগে এক শিক্ষার্থীকে থানায় হস্তান্তর করেছেন। আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তবে ওই শিক্ষার্থীর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।’

জানতে চাইলে ঢাবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রাব্বানী বলেন, জিয়া হলের এক শিক্ষার্থীকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে কোনোভাবেই ঢাবিতে রাখা হবে না।