ফরিদপুরে অনুষ্ঠিত হলো দুই দিনব্যাপী জাতীয় বিতর্ক উৎসব। শনিবার বিকেলে স্থানীয় কবি জসীমউদ্দীন হলে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বীর বিক্রম। 

‘মোরা প্রকৃতির মত স্বচ্ছল’ শিরোনামে  শুক্র ও শনিবার দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এই বিতর্ক উৎসবের আয়োজন করে ফরিদপুর ডিবেট ফোরাম। 

সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তৌফিক-ই-ইলাহী বলেন, সভ্যতা একদিনে গড়ে উঠেনি, মানুষের মুক্ত চিন্তার বিকাশ ও যুক্তি তর্কের মধ্যে দিয়েই আজকের এই আধুনিক বিজ্ঞান ও সমাজের উদ্ভব হয়েছে। সক্রেটিসের মতো দার্শনিকরা যে পথ দেখিয়ে গেছেন তারই ধারাবাহিকতায় আজ তোমরা বিতর্ক করে যুক্তিবাদি সমাজ বিনির্মাণের জন্য কাজ করে যাচ্ছো। 

তিনি বলেন, এটি খুবই আশার কথা যে যুবসমাজের বেশিরভাগই যখন মোবাইলে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ নিয়ে সময় কাটাচ্ছে তখন তোমরা একটু ভিন্ন চিন্তা নিয়ে সমাজ গঠনে নিজেদের নিয়োজিত রেখেছো। 

বিতার্কিকদের সাধুবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এজন্য অনেক পড়াশোনা করতে হবে, ইতিহাস ও ঐহিত্য সম্পর্কে জানতে হবে। 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ তার বক্তব্যে বলেন, যারা বিতর্ক করে তারা মেধাবী হয়, কারণ মেধা ছাড়া যুক্তি তর্ক উপস্থাপন করা যায় না, এই মেধাবীদের বিকাশ আমরা চাই। আমরা যারা সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছি তাদের এজন্য দায়িত্ব নিতে হবে। 

তিনি বলেন, কোনো মেধাবী ছেলেমেয়ে যাতে অর্থের অভাবে ঝরে না পড়ে, টাকার জন্য যাতে তাদের লেখাপড়া বন্ধ না হয় সেই দায়িত্ব নেবে এ কে আজাদ ট্রাস্ট।

তিনি উপস্থিত বিতার্কিক ও শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ জীবনে কর্মক্ষেত্রের জন্য নিজেদের যোগ্য হয়ে গড়ে উঠার আহ্বান জানান।

ফরিদপুর ডিবেট ফোরামের সভাপতি অমিত ঘোষের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শাকিল আহমেদ সাগরের সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সিলেট ৫ আসনের সংসদ সদস্য হাফিজ আহমেদ মজুমদার, ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার, বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব ও নোয়াবের মহাসচিব আখতার হোসেন খান, বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম নিরু, বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক মিজানুর রহমান, ফরিদপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মোল্যা ও ফরিদপুর ডিবেট ফোরামের উপদেষ্টা শওকত আলী জাহিদ।

বিতর্ক উৎসবের চূড়ান্ত পর্বে স্কুল পর্যয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ফরিদপুর জিলা স্কুল, রানার্স আপ হয়েছে ফরিদপুর পুলিশ লাইনস হাই স্কুল। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় চ্যাম্পিয়ন ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় রানার্স আপ হয়। 

সমাপনী অনুষ্ঠানের আগে অতিথিদের উপস্থিতিতে আকর্ষণীয় সংসদীয় ফরমেটে বিতর্ক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। এর বিষয় ছিলো ‘এই সংসদ মনে করে, পদ্মা বিভাগের জন্য অবকাঠামোগত উন্নয়ই মূল চ্যালেঞ্জ’। খ্যাতিমান বিতার্কিকদের উপস্থাপনায় এই বিতর্ক সকলকে মুগ্ধ করে।