শ্রীলঙ্কার নতুন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে বলেছেন, তিনি আত্মবিশ্বাসী যে, শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বদলাতে পারবেন। কিন্তু এর জন্য তাঁর দেড় বছর সময় লাগবে। এর পরই অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে। রাজধানী কলম্বোতে আলজাজিরার সঙ্গে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।


নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকটে থাকা শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২৩ সালটা কঠিন হবে। তবে ২০২৪ সালে অগ্রগতির দেখা মিলবে। গত মে মাসে জটিল রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে ৭৩ বছর বয়সী রনিল শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, প্রায় দু'দিন দেশে কোনো সরকার ব্যবস্থা কার্যকর ছিল না; পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছিল। তিনি বলেন, 'তখন আমি ভাবলাম, পরিস্থিতি খারাপ; এটা আমার দেশ। তাই আমি সফল হবো কি হবো না- এ নিয়ে দোলাচলে থাকতে পারি না। আমার দায়িত্ব গ্রহণ করা উচিত এবং সফল হওয়ার চেষ্টা করা উচিত।' রনিল বলেন, 'আমি আত্মবিশ্বাসী যে, আমি অর্থনৈতিক অবস্থা বদলাতে পারব।'


লঙ্গরখানায় বাড়ছে ক্ষুধার্ত মুখ

লঙ্গরখানায় শিশুদের সঙ্গে নিয়ে কয়েক ডজন পরিবারের মায়েরা থালা হাতে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁদের চোখে-মুখে অপেক্ষা- কখন পাতে উঠবে খাবার। 'আমরা এখানে, কারণ আমরা ক্ষুধার্ত' বিবিসিকে এভাবেই বলেছেন চার সন্তানের মা চন্দ্রিকা মানেল। বাচ্চাদের একজনের মুখে তুলে দিতে ডাল আর শাকের সঙ্গে এক লোকমা ভাত মেশাতে মেশাতে তিনি জানান, এক টুকরো রুটি কেনাও এখন তাঁদের জন্য ভয়াবহ সংগ্রামের। তিনি বলেন, 'একটা সময় ছিল যখন আমি ওদের দুধভাত দিতে পারতাম। এখন সবজিও রাঁধতে পারি না। এসবের অনেক দাম।'


শ্রীলঙ্কার এই মায়ের কথায় দেশটির অর্থনৈতিক পরিস্থিতির চিত্র ফুটে উঠেছে। সেখানে চরম দুর্ভোগে দিন পার করছেন সাধারণ মানুষ। কমতে থাকা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ম্ফীতির কারণে কয়েক মাস ধরে শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক অবস্থা চরম খারাপ। কর কমিয়ে রাষ্ট্রীয় কোষাগার সংকুচিত করা ও উচ্চাকাঙ্ক্ষী অবকাঠামোগত প্রকল্পের জন্য চীনের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নেওয়ায় প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসেকেই অনেকে সংকটের কারিগর মনে করেন। এর সঙ্গে আছে মহামারির কারণে পর্যটনে ধস ও ইউক্রেন সংকটে তেলের দাম বৃদ্ধি।