
ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা, যেখানে মানবজীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবকিছুর সুবিন্যস্ত বর্ণনা রয়েছে। তারই আলোকে আমাদের চারপাশের পরিবেশ সুরক্ষারও তাগিদ দিয়েছে ইসলাম। পৃথিবীতে প্রাণিকুলের টিকে থাকার জন্য ভারসাম্যপূর্ণ প্রাকৃতিক পরিবেশ দরকার। সুস্থ ও সুন্দরভাবে জীবনধারণের জন্যও এর বিকল্প নেই।
আল্লাহতায়ালা সুরা হিজরের ১৯-২২ আয়াতে এরশাদ করেন, 'জমিনকে আমি বিস্তৃত করেছি এবং তাতে সুদৃঢ় পাহাড় স্থাপন করেছি। আর তাতে উৎপন্ন করেছি সকল প্রকার বস্তু সুনির্দিষ্ট পরিমাণে। আর তাতে তোমাদের জন্য এবং তোমরা যার রিজিকদাতা নও তাদের জন্য রেখেছি জীবনোপকরণ। আর প্রতিটি বস্তুরই ভান্ডারসমূহ রয়েছে আমার কাছে এবং আমি তা অবতীর্ণ করি কেবল নির্দিষ্ট পরিমাণে। আর আমি বায়ুকে উর্বরকারীরূপে প্রেরণ করি। অতঃপর আসমান থেকে বৃষ্টিবর্ষণ করি এবং তা তোমাদের পান করাই। ওর ভান্ডার তোমাদের কাছে নেই।'
সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ মূলত সামাজিক জীব। মানুষ ঘিরেই পরিবেশ-প্রকৃতি ও সমাজের সৃষ্টি। পরিবেশে জীবের বাসোপযোগী গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে পানি ও মাটি। মূলত মাটি থেকেই অনেক কিছু উৎপন্ন হয় এবং উৎপাদিত শস্য পানি দ্বারা জীবিত থাকে। এ প্রসঙ্গে কোরআনুল কারিমের সুরা ইয়াছিনের ৩৩ আয়াতে এরশাদ হচ্ছে, 'তাদের জন্য নিদর্শন একটি মৃত ভূমি। আমি একে সঞ্জীবিত করি এবং তা থেকে উৎপন্ন করি শস্য, তারা তা ভক্ষণ করে। আমি তাতে উৎপন্ন করি খেজুর এবং প্রবাহিত করি ঝর্ণাধারা, যাতে তারা ফল খায়।' পরিবেশ সুস্থ ও পরিচ্ছন্ন রাখতে ইসলামের বিশেষ তাগিদ রয়েছে। সুরা আর-রুমের ৪১ আয়াতে এরশাদ হয়েছে :'মানুষের কৃতকর্মের দরুন সমুদ্র ও স্থলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে।' উল্লিখিত আয়াতে জল-স্থলে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে পরিবেশের প্রতি দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার তাগিদ প্রদান করা হয়েছে।
পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করা প্রত্যেক মুমিনের অবশ্য কর্তব্য। বৃক্ষরাজি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। তাই ইসলাম বৃক্ষরোপণের প্রতি বিশেষ তাগিদ দিয়েছে। এমনকি বৃক্ষরোপণকে সদকায়ে জারিয়ার সওয়াব হিসেবেও অভিহিত করা হয়েছে। বৃক্ষরোপণের পর যতদিন মানুষ ও জীবজন্তু ওই বৃক্ষ থেকে প্রাপ্ত ফল ভোগ করবে, ছায়া পাবে, ততদিন পর্যন্ত রোপণকারীর আমলনামায় সদকায়ে জারিয়ার সওয়াব লেখা হতে থাকবে। -সহিহ বোখারি।
আল্লাহতায়ালা পৃথিবীতে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা এবং জীবজগতের অস্তিত্ব রক্ষায় বৃক্ষ সৃষ্টি করেছেন।
আল্লাহতায়ালা সুরা কাফের ৭-৮ আয়াতে এরশাদ করেন, 'আমি বিস্তৃত করেছি ভূমিকে ও তাতে স্থাপন করেছি পর্বতমালা এবং উৎপন্ন করেছি নয়নাভিরাম উদ্ভিদরাজি। এটি আল্লাহর অনুরাগী বান্দাদের জন্য জ্ঞান ও উপদেশস্বরূপ।' গাছ মানুষ ও পরিবেশের অকৃত্রিম বন্ধু। সবুজ গাছপালার ওপরই নির্ভর করে মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীর টিকে থাকা। এ গাছ ইচ্ছা হলেই কাটা যাবে না। কারণ 'গাছেরও প্রাণ আছে'- এটা রাসুলে পাক (সা.)-এর বাণী।
হাদিসে বর্ণিত- রাসুলে পাক (সা.) থেকে জানা যায়, এক লোক যখন অকারণে একটি গাছের ডাল ভাঙে, তখন রাসুলে পাক (সা.) সে লোকটির চুল মৃদুভাবে টান দিয়ে বলেন, তুমি যেমন শরীরে আঘাত পেলে ব্যথা পাও, গাছের পাতা বা ডাল ছিঁড়লে গাছও তেমন ব্যথা পায়। অপর হাদিসে বর্ণিত- রাসুলে পাক (সা.) বলেন, যদি তুমি মনে করো আগামীকাল কিয়ামত হবে, তবুও আজ একটি গাছ লাগাও।
পৃথিবী নামক ছোট এ গ্রহে জীবের বেঁচে থাকার জন্য সব উপাদান দিয়ে আল্লাহতায়ালা পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন। কিন্তু আমাদের নানা অত্যাচারে পৃথিবীর পরিবেশ দিন দিন উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। ফলে জীবের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়ছে। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার পরিবেশ হারাচ্ছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। হাদিসে রাসুল (সা.) পরিবেশ সুরক্ষায় চলার নানা উপায় বাতলে দিয়েছেন। আমরা জানি, ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস। কেবল পরিবেশ দিবসেই নয় বরং সুস্থতার জন্য প্রতিদিন পরিবেশসম্মত আচরণের বিকল্প নেই। ইসলামের সেটাই শিক্ষা।
ড. মো. শাহজাহান কবীর: চেয়ারম্যান, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
আল্লাহতায়ালা সুরা হিজরের ১৯-২২ আয়াতে এরশাদ করেন, 'জমিনকে আমি বিস্তৃত করেছি এবং তাতে সুদৃঢ় পাহাড় স্থাপন করেছি। আর তাতে উৎপন্ন করেছি সকল প্রকার বস্তু সুনির্দিষ্ট পরিমাণে। আর তাতে তোমাদের জন্য এবং তোমরা যার রিজিকদাতা নও তাদের জন্য রেখেছি জীবনোপকরণ। আর প্রতিটি বস্তুরই ভান্ডারসমূহ রয়েছে আমার কাছে এবং আমি তা অবতীর্ণ করি কেবল নির্দিষ্ট পরিমাণে। আর আমি বায়ুকে উর্বরকারীরূপে প্রেরণ করি। অতঃপর আসমান থেকে বৃষ্টিবর্ষণ করি এবং তা তোমাদের পান করাই। ওর ভান্ডার তোমাদের কাছে নেই।'
সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ মূলত সামাজিক জীব। মানুষ ঘিরেই পরিবেশ-প্রকৃতি ও সমাজের সৃষ্টি। পরিবেশে জীবের বাসোপযোগী গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে পানি ও মাটি। মূলত মাটি থেকেই অনেক কিছু উৎপন্ন হয় এবং উৎপাদিত শস্য পানি দ্বারা জীবিত থাকে। এ প্রসঙ্গে কোরআনুল কারিমের সুরা ইয়াছিনের ৩৩ আয়াতে এরশাদ হচ্ছে, 'তাদের জন্য নিদর্শন একটি মৃত ভূমি। আমি একে সঞ্জীবিত করি এবং তা থেকে উৎপন্ন করি শস্য, তারা তা ভক্ষণ করে। আমি তাতে উৎপন্ন করি খেজুর এবং প্রবাহিত করি ঝর্ণাধারা, যাতে তারা ফল খায়।' পরিবেশ সুস্থ ও পরিচ্ছন্ন রাখতে ইসলামের বিশেষ তাগিদ রয়েছে। সুরা আর-রুমের ৪১ আয়াতে এরশাদ হয়েছে :'মানুষের কৃতকর্মের দরুন সমুদ্র ও স্থলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে।' উল্লিখিত আয়াতে জল-স্থলে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে পরিবেশের প্রতি দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার তাগিদ প্রদান করা হয়েছে।
পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করা প্রত্যেক মুমিনের অবশ্য কর্তব্য। বৃক্ষরাজি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। তাই ইসলাম বৃক্ষরোপণের প্রতি বিশেষ তাগিদ দিয়েছে। এমনকি বৃক্ষরোপণকে সদকায়ে জারিয়ার সওয়াব হিসেবেও অভিহিত করা হয়েছে। বৃক্ষরোপণের পর যতদিন মানুষ ও জীবজন্তু ওই বৃক্ষ থেকে প্রাপ্ত ফল ভোগ করবে, ছায়া পাবে, ততদিন পর্যন্ত রোপণকারীর আমলনামায় সদকায়ে জারিয়ার সওয়াব লেখা হতে থাকবে। -সহিহ বোখারি।
আল্লাহতায়ালা পৃথিবীতে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা এবং জীবজগতের অস্তিত্ব রক্ষায় বৃক্ষ সৃষ্টি করেছেন।
আল্লাহতায়ালা সুরা কাফের ৭-৮ আয়াতে এরশাদ করেন, 'আমি বিস্তৃত করেছি ভূমিকে ও তাতে স্থাপন করেছি পর্বতমালা এবং উৎপন্ন করেছি নয়নাভিরাম উদ্ভিদরাজি। এটি আল্লাহর অনুরাগী বান্দাদের জন্য জ্ঞান ও উপদেশস্বরূপ।' গাছ মানুষ ও পরিবেশের অকৃত্রিম বন্ধু। সবুজ গাছপালার ওপরই নির্ভর করে মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীর টিকে থাকা। এ গাছ ইচ্ছা হলেই কাটা যাবে না। কারণ 'গাছেরও প্রাণ আছে'- এটা রাসুলে পাক (সা.)-এর বাণী।
হাদিসে বর্ণিত- রাসুলে পাক (সা.) থেকে জানা যায়, এক লোক যখন অকারণে একটি গাছের ডাল ভাঙে, তখন রাসুলে পাক (সা.) সে লোকটির চুল মৃদুভাবে টান দিয়ে বলেন, তুমি যেমন শরীরে আঘাত পেলে ব্যথা পাও, গাছের পাতা বা ডাল ছিঁড়লে গাছও তেমন ব্যথা পায়। অপর হাদিসে বর্ণিত- রাসুলে পাক (সা.) বলেন, যদি তুমি মনে করো আগামীকাল কিয়ামত হবে, তবুও আজ একটি গাছ লাগাও।
পৃথিবী নামক ছোট এ গ্রহে জীবের বেঁচে থাকার জন্য সব উপাদান দিয়ে আল্লাহতায়ালা পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন। কিন্তু আমাদের নানা অত্যাচারে পৃথিবীর পরিবেশ দিন দিন উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। ফলে জীবের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়ছে। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার পরিবেশ হারাচ্ছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। হাদিসে রাসুল (সা.) পরিবেশ সুরক্ষায় চলার নানা উপায় বাতলে দিয়েছেন। আমরা জানি, ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস। কেবল পরিবেশ দিবসেই নয় বরং সুস্থতার জন্য প্রতিদিন পরিবেশসম্মত আচরণের বিকল্প নেই। ইসলামের সেটাই শিক্ষা।
ড. মো. শাহজাহান কবীর: চেয়ারম্যান, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
মন্তব্য করুন