
ইসলামে ভিক্ষাবৃত্তি একটি অসম্মানজনক কাজ। যারা ভিক্ষাবৃত্তি করে, সমাজেও তাদের ভালো চোখে দেখা হয় না। আমরা দেখছি, দিন দিন ভিক্ষুকের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ইসলাম ভিক্ষাবৃত্তিকে কখনও প্রশ্রয় দেয়নি। কঠোরভাবে বলা হয়েছে এ থেকে বিরত থাকতে।
এ প্রসঙ্গে রাসুলে পাক (সা.) বলেন, 'আমি হলাম সম্পদের খাজনার মালিক। যাকে আমি স্বেচ্ছায় দান করব, তার জন্য সে মাল হবে বরকতপূর্ণ; আর যাকে চাওয়া বা জোর করার কারণে মাল দেব সে ওই ব্যক্তির মতো হবে, যে পেট ভরে খায়; কিন্তু পরিতৃপ্ত হতে পারে না।' (মুসলিম)।
রাসুলে পাক (সা.) আরও বলেন, 'মহান আল্লাহর কাছে হালাল কাজগুলোর মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট এবং রাগের উদ্রেক সৃষ্টিকারী কাজ হলো স্ত্রীকে তালাক দেওয়া ও ভিক্ষাবৃত্তি করা। (ইবনে মাজাহ)।
অন্য হাদিসে রাসুলে পাক (সা.) বলেন, 'যে ব্যক্তি বিনা প্রয়োজনে ভিক্ষা চায়, সে হাতে অঙ্গার একত্রিত করার মতো ভয়াবহ কাজ করে (বায়হাকি )।'
ইসলাম একে অপরকে সাহায্য-সহযোগিতা এবং বিপদাপদে মাল-সম্পদ দান করার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু সে দান ভিক্ষাবৃত্তির আদলে নয়, বরং দানকারীর সন্তুষ্টিক্রমে ও স্বেচ্ছায় হতে হবে। মহানবী (সা.) ভিক্ষাবৃত্তিকে তুচ্ছ জ্ঞান করে এরশাদ করেন, 'উপরের হাত নিচের হাত থেকে উত্তম।' (মুসলিম) হজরত মুগিরা ইবনে শোবা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলে পাক (সা.) বলেন, 'আল্লাহতায়ালা মাল অপচয় ও ভিক্ষাবৃত্তি অপছন্দ করেন।' (বুখারি)
কোনো মুসলমান ভিক্ষার উদ্দেশ্যে অন্যের কাছে হাত প্রসারিত করলে তার চেহারার ঔজ্জ্বল্য বিলীন হয়ে যায় এবং লোকসমাজে নিজ মনুষ্যত্ব ও মানমর্যাদা হারায়। হাদিসে শুধু তিন শ্রেণির মানুষের জন্য ভিক্ষা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
রাসুলে পাক (সা.) বলেন, 'তিন ব্যক্তি ছাড়া কারও জন্য ভিক্ষা করা জায়েজ নেই। তারা হলো-
১. ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি যার সব সম্পদ নিঃশেষ হয়ে গেছে, তার জন্য ভিক্ষার অনুমতি রয়েছে। যখন প্রয়োজন শেষ হয়ে যাবে, তখন আর ভিক্ষা করা হালাল হবে না।
২. ওই ব্যক্তি, যার সম্পদ কোনো কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে। তার জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী ভিক্ষা করা হালাল হবে।
৩. ওই ব্যক্তি, যে একেবারেই নিঃস্ব এবং তার বংশের তিনজন সাক্ষী দেয় যে, সে নিঃস্ব। তার জন্যও প্রয়োজন অনুযায়ী ভিক্ষা করা হালাল। এর বেশি হালাল নয়।' (মুসলিম) কেউ যদি উপার্জনের ক্ষমতা একেবারেই না রাখে এবং কারও কাছে সাহায্যের হাত বাড়াবে এমন কেউ না থাকে, তাহলে সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু কোনো মালদার ধনী ব্যক্তি যদি নিজ বদভ্যাসের কারণে ভিক্ষাবৃত্তিতে লিপ্ত হয়, কিংবা কোনো গরিব ধনী হওয়ার উদ্দেশ্যে ভিক্ষা করে, তখন সে হবে নিন্দার পাত্র।
রাসুলে পাক (সা.) বলেন, 'যে ব্যক্তি ধনী হওয়ার উদ্দেশ্যে লোকদের কাছে ভিক্ষা চাইবে, সে যেন নিজ চেহারাকে কেয়ামত পর্যন্ত ক্ষতযুক্ত করে দিল। সে জাহান্নামের গরম পাথর ভক্ষণ করতে বাধ্য হবে। সুতরাং যার ইচ্ছা নিজের জন্য এসব জিনিস বেশি পরিমাণে সংগ্রহ করুক আর যার ইচ্ছা কম করুক।' (মুসলিম)
রাসুলে পাক (সা.) আরও বলেন, 'যে ব্যক্তি ভিক্ষাবৃত্তিতে নিজেকে অভ্যস্ত বানায়, সে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে এমন অবস্থায় যে, তার মুখমণ্ডলে এক টুকরা গোশতও থাকবে না।' (বুখারি)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলে পাক (সা.) বলেন, 'কোনো ব্যক্তি সকালে উঠে লাকড়ি বহন করে উপার্জন করা ও তা থেকে সদকা করা এবং নিজ কাজে ব্যয় করা অধিক উত্তম ওই ব্যক্তি থেকে, যে ভিক্ষা করে। কখনও ভিক্ষা করে কিছু পায় কখনও পায় না।' (মুসলিম)।
উপরোক্ত হাদিস থেকে বোঝা যায়, ভিক্ষাবৃত্তিকে ইসলাম কখনও প্রশ্রয় দেয়নি। বরং ঘৃণার চোখে দেখেছে এবং কঠোরভাবে নিষেধ করেছে। তার বদলে ইসলাম আত্মকেন্দ্রিক কর্মসংস্থান গড়া ও নিজ হাতে উপার্জনের প্রতি উৎসাহিত করেছে।
রাসুলে পাক (সা.) এশরাদ করেন, 'নিজ হাতে উপার্জনকারী আল্লাহর প্রিয় বান্দা।' অপর একটি হাদিসে রাসুলে পাক (সা.) বলেন, 'সেই ব্যক্তি উত্তম, যে নিজ হাতে উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহ করে।'
আমরা পূর্ববর্তী নবী ও সাহাবাদের জীবনের দিকে লক্ষ্য করলে দেখতে পাই, তারা সবাই নিজ হাতে উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহ করেছেন।
মহানবী (সা.) বলেন, 'হজরত দাউদ (আ.) নিজ হাতে উপার্জন করতেন। (বুখারি )
হাদিসে বর্ণিত, 'হজরত আদম (আ.) কৃষিকাজ করতেন, হজরত নুহ (আ.) কাঠমিস্ত্রি ছিলেন, হজরত ইদ্রিস (আ.) কাপড় সেলাই করতেন এবং মুসা (আ.) রাখালের কাজ করতেন।'
রাসুলে পাকও (সা.) পরিশ্রম করে নিজ হাতে উপার্জন করতেন। কোরআন ও হাদিসে ব্যবসার মাধ্যমে নিজ হাতে উপার্জনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহতায়ালা কোরআনুল কারিমে এরশাদ করেন- 'সালাত সমাপ্তে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ জীবিকা তালাশ কর।' (সুরা জুমা :১০)
রাসুলে পাককে (সা.) সর্বোত্তম উপার্জন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, 'নিজ হাতে কাজ করা এবং হালাল পথে ব্যবসা করে যে উপার্জন করা হয়, তাই সর্বোত্তম।' (মেশকাত)
উপরোক্ত আয়াত ও হাদিস দ্বারা বোঝা যায়, ইসলাম ভিক্ষাবৃত্তিতে নয়, বরং নিজ হাতে উপার্জনের প্রতি উৎসাহিত করেছে। মহান আল্লাহতায়ালা মুসলিম উম্মাহকে ভিক্ষাবৃত্তির কবল থেকে হেফাজত করুন।
ড. মো. শাহজাহান কবীর :চেয়ারম্যান, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
এ প্রসঙ্গে রাসুলে পাক (সা.) বলেন, 'আমি হলাম সম্পদের খাজনার মালিক। যাকে আমি স্বেচ্ছায় দান করব, তার জন্য সে মাল হবে বরকতপূর্ণ; আর যাকে চাওয়া বা জোর করার কারণে মাল দেব সে ওই ব্যক্তির মতো হবে, যে পেট ভরে খায়; কিন্তু পরিতৃপ্ত হতে পারে না।' (মুসলিম)।
রাসুলে পাক (সা.) আরও বলেন, 'মহান আল্লাহর কাছে হালাল কাজগুলোর মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট এবং রাগের উদ্রেক সৃষ্টিকারী কাজ হলো স্ত্রীকে তালাক দেওয়া ও ভিক্ষাবৃত্তি করা। (ইবনে মাজাহ)।
অন্য হাদিসে রাসুলে পাক (সা.) বলেন, 'যে ব্যক্তি বিনা প্রয়োজনে ভিক্ষা চায়, সে হাতে অঙ্গার একত্রিত করার মতো ভয়াবহ কাজ করে (বায়হাকি )।'
ইসলাম একে অপরকে সাহায্য-সহযোগিতা এবং বিপদাপদে মাল-সম্পদ দান করার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু সে দান ভিক্ষাবৃত্তির আদলে নয়, বরং দানকারীর সন্তুষ্টিক্রমে ও স্বেচ্ছায় হতে হবে। মহানবী (সা.) ভিক্ষাবৃত্তিকে তুচ্ছ জ্ঞান করে এরশাদ করেন, 'উপরের হাত নিচের হাত থেকে উত্তম।' (মুসলিম) হজরত মুগিরা ইবনে শোবা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলে পাক (সা.) বলেন, 'আল্লাহতায়ালা মাল অপচয় ও ভিক্ষাবৃত্তি অপছন্দ করেন।' (বুখারি)
কোনো মুসলমান ভিক্ষার উদ্দেশ্যে অন্যের কাছে হাত প্রসারিত করলে তার চেহারার ঔজ্জ্বল্য বিলীন হয়ে যায় এবং লোকসমাজে নিজ মনুষ্যত্ব ও মানমর্যাদা হারায়। হাদিসে শুধু তিন শ্রেণির মানুষের জন্য ভিক্ষা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
রাসুলে পাক (সা.) বলেন, 'তিন ব্যক্তি ছাড়া কারও জন্য ভিক্ষা করা জায়েজ নেই। তারা হলো-
১. ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি যার সব সম্পদ নিঃশেষ হয়ে গেছে, তার জন্য ভিক্ষার অনুমতি রয়েছে। যখন প্রয়োজন শেষ হয়ে যাবে, তখন আর ভিক্ষা করা হালাল হবে না।
২. ওই ব্যক্তি, যার সম্পদ কোনো কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে। তার জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী ভিক্ষা করা হালাল হবে।
৩. ওই ব্যক্তি, যে একেবারেই নিঃস্ব এবং তার বংশের তিনজন সাক্ষী দেয় যে, সে নিঃস্ব। তার জন্যও প্রয়োজন অনুযায়ী ভিক্ষা করা হালাল। এর বেশি হালাল নয়।' (মুসলিম) কেউ যদি উপার্জনের ক্ষমতা একেবারেই না রাখে এবং কারও কাছে সাহায্যের হাত বাড়াবে এমন কেউ না থাকে, তাহলে সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু কোনো মালদার ধনী ব্যক্তি যদি নিজ বদভ্যাসের কারণে ভিক্ষাবৃত্তিতে লিপ্ত হয়, কিংবা কোনো গরিব ধনী হওয়ার উদ্দেশ্যে ভিক্ষা করে, তখন সে হবে নিন্দার পাত্র।
রাসুলে পাক (সা.) বলেন, 'যে ব্যক্তি ধনী হওয়ার উদ্দেশ্যে লোকদের কাছে ভিক্ষা চাইবে, সে যেন নিজ চেহারাকে কেয়ামত পর্যন্ত ক্ষতযুক্ত করে দিল। সে জাহান্নামের গরম পাথর ভক্ষণ করতে বাধ্য হবে। সুতরাং যার ইচ্ছা নিজের জন্য এসব জিনিস বেশি পরিমাণে সংগ্রহ করুক আর যার ইচ্ছা কম করুক।' (মুসলিম)
রাসুলে পাক (সা.) আরও বলেন, 'যে ব্যক্তি ভিক্ষাবৃত্তিতে নিজেকে অভ্যস্ত বানায়, সে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে এমন অবস্থায় যে, তার মুখমণ্ডলে এক টুকরা গোশতও থাকবে না।' (বুখারি)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলে পাক (সা.) বলেন, 'কোনো ব্যক্তি সকালে উঠে লাকড়ি বহন করে উপার্জন করা ও তা থেকে সদকা করা এবং নিজ কাজে ব্যয় করা অধিক উত্তম ওই ব্যক্তি থেকে, যে ভিক্ষা করে। কখনও ভিক্ষা করে কিছু পায় কখনও পায় না।' (মুসলিম)।
উপরোক্ত হাদিস থেকে বোঝা যায়, ভিক্ষাবৃত্তিকে ইসলাম কখনও প্রশ্রয় দেয়নি। বরং ঘৃণার চোখে দেখেছে এবং কঠোরভাবে নিষেধ করেছে। তার বদলে ইসলাম আত্মকেন্দ্রিক কর্মসংস্থান গড়া ও নিজ হাতে উপার্জনের প্রতি উৎসাহিত করেছে।
রাসুলে পাক (সা.) এশরাদ করেন, 'নিজ হাতে উপার্জনকারী আল্লাহর প্রিয় বান্দা।' অপর একটি হাদিসে রাসুলে পাক (সা.) বলেন, 'সেই ব্যক্তি উত্তম, যে নিজ হাতে উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহ করে।'
আমরা পূর্ববর্তী নবী ও সাহাবাদের জীবনের দিকে লক্ষ্য করলে দেখতে পাই, তারা সবাই নিজ হাতে উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহ করেছেন।
মহানবী (সা.) বলেন, 'হজরত দাউদ (আ.) নিজ হাতে উপার্জন করতেন। (বুখারি )
হাদিসে বর্ণিত, 'হজরত আদম (আ.) কৃষিকাজ করতেন, হজরত নুহ (আ.) কাঠমিস্ত্রি ছিলেন, হজরত ইদ্রিস (আ.) কাপড় সেলাই করতেন এবং মুসা (আ.) রাখালের কাজ করতেন।'
রাসুলে পাকও (সা.) পরিশ্রম করে নিজ হাতে উপার্জন করতেন। কোরআন ও হাদিসে ব্যবসার মাধ্যমে নিজ হাতে উপার্জনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহতায়ালা কোরআনুল কারিমে এরশাদ করেন- 'সালাত সমাপ্তে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ জীবিকা তালাশ কর।' (সুরা জুমা :১০)
রাসুলে পাককে (সা.) সর্বোত্তম উপার্জন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, 'নিজ হাতে কাজ করা এবং হালাল পথে ব্যবসা করে যে উপার্জন করা হয়, তাই সর্বোত্তম।' (মেশকাত)
উপরোক্ত আয়াত ও হাদিস দ্বারা বোঝা যায়, ইসলাম ভিক্ষাবৃত্তিতে নয়, বরং নিজ হাতে উপার্জনের প্রতি উৎসাহিত করেছে। মহান আল্লাহতায়ালা মুসলিম উম্মাহকে ভিক্ষাবৃত্তির কবল থেকে হেফাজত করুন।
ড. মো. শাহজাহান কবীর :চেয়ারম্যান, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
বিষয় : ইসলাম ও সমাজ মো. শাহজাহান কবীর
মন্তব্য করুন