ডিম, আলু ও পেঁয়াজের সরকার নির্ধারিত দর কেউই মানছেন না। পাইকারি থেকে খুচরা পর্যায়ে যে যার মতো বিক্রি করছেন। চার দিনেও দর কার্যকর না হওয়ায় খুচরা ব্যবসায়ীরা দুষছেন, পাইকার ও আড়তদারদের। তাদের অভিযোগ, মানুষ বেশি খবর নিচ্ছে খুচরা দোকানে। পাইকারি পর্যায়ে না কমলে আমরা কীভাবে কম রাখব? অন্যদিকে, বাজারে গিয়ে হতাশ ক্রেতারা বলছেন, সরকার দর ঠিক করে হাঁফ ছেড়েছে। বাজারে কী হচ্ছে, সেদিকে খেয়াল নেই।

রাজধানীর হাতিরপুল কাঁচাবাজারে গতকাল রোববার বিকেলে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী মো. শাহাবুদ্দিন সমকালকে বলেন, ‘আলু ৫০ টাকার কমে কেউ বিক্রি করছেন না। পেঁয়াজ কিনেছি ৮৫ টাকা কেজি। দাম কমানোর এ ঘোষণার মানে কী? বেশি দামেই তো কিনছি!’

অস্বাভাবিক দাম বেড়ে যাওয়ায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত বৃহস্পতিবার প্রতি পিস ডিম ১২, আলু ও পেঁয়াজের কেজি যথাক্রমে ৩৪-৩৫ এবং ৬৪-৬৫ বেঁধে দেয়। কিন্তু বাজারে এখনও এ দর কার্যকর হয়নি।

গতকাল রাজধানীর হাতিরপুল, নাখালপাড়া, তেজকুনিপাড়াসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আগের মতোই আলু ৫০-৫৫ ও দেশি পেঁয়াজ ৭৫-৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকার আশপাশে। তবে কারওয়ানবাজারে পেঁয়াজে ৫ ও আলুর কেজি ২ টাকা কম দেখা গেছে।

এ বাজারের আলু ও পেঁয়াজ ব্যবসায়ী রবিউল হোসেন বলেন, ‘বাজার নিয়ন্ত্রণে আড়তে দাম কমাতে হবে। পাইকাররা রাতে আড়তে আলু ও পেঁয়াজ বিক্রি করে বাসায় চলে যান। সরকারি সংস্থা অভিযানে আসে দিনে। ছোট ব্যবসায়ীদের জরিমানা করে দায় সারে।’

ডিম ব্যবসায়ী কামরুল হাসানের দাবি, তেজগাঁওয়ের আড়তেই পাইকারি পর্যায়ে প্রতি পিস ডিমের দাম রাখছে ১২ টাকা। পরিবহন খরচ যোগ করে মুনাফা তুলতে হলে ১৩ টাকার নিচে বিক্রি করা সম্ভব নয়।

তেজকুনিপাড়া এলাকার চাঁদপুর স্টোরের বিক্রয় কর্মী সুমন হোসেন বলেন, ‘মহল্লায় বেচাবিক্রি কম। বাজারে দাম না কমলে তো মহল্লার খুচরা বিক্রেতারা লোকসান দিয়ে বিক্রি করবে না। মানুষ বেশি দামে কিনে আমাদের কাছে খেদোক্তি করে চলে যান।’

এদিকে, গতকাল ভোক্তা অধিদপ্তর ঢাকা মহানগরসহ দেশের সব বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে আলু, পেঁয়াজ, ডিমসহ নিত্যপণ্য এবং স্যালাইনের দাম স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে অভিযান চালায়। এসব অভিযানে অধিদপ্তরের ৩৭টিম ৮২টি প্রতিষ্ঠানকে ৩ লাখ ৫০ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেছে।