- কার্টুন
- তাহিরপুরে খুলল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অধিকাংশ শিক্ষার্থীর বই ভেসে গেছে বন্যায়
তাহিরপুরে খুলল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অধিকাংশ শিক্ষার্থীর বই ভেসে গেছে বন্যায়

স্কুল খোলার প্রথমদিনে বই না থাকায় খালি হাতেই ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীরা
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে ভয়াবহ বন্যা এবং ঈদের ছুটির পর খুলেছে উপজেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। রোববার প্রথম দিনে বিদ্যালয়ে যাওয়া অধিকাংশ শিক্ষার্থীর কাছেই ছিল না বই। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে তাদের সব পাঠ্যপুস্তক। প্রাথমিকভাবে বিদ্যালয়ে থাকা কিছু বই বিতরণ করা হলেও তা পর্যাপ্ত নয়।
উপজেলার বালিজুরি নয়াহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৭২ জন। তাদের মধ্যে রোববার উপস্থিত হয় প্রায় ১০০ ছাত্রছাত্রী।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এনামুল হক জানান, বন্যার পানিতে সব বই ভেসে গেছে বলে অধিকাংশ শিক্ষার্থী তাকে জানিয়েছে। নতুন বই দেওয়ার দাবি জানিয়েছে সবাই।
বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র সোহান মিয়া বলে, 'খালি হাতে স্কুলে আইছি। স্যারকে বলছি আমাকে নতুন বই দেওয়ার জন্য।'
তাহিরপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিরা রানী জোয়ারদার বলেন, তার বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রী রয়েছে ৪৯০ জন। রোববার বিদ্যালয় খোলার প্রথম দিনে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কম ছিল। যারা এসেছে তাদের অধিকাংশই জানিয়েছে, বন্যার পানিতে বই ভেসে গেছে।
উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের পাতারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার রায় বলেন, বিদ্যালয় খোলার প্রথম দিন উপস্থিতি কম ছিল। যারা এসেছে তাদের অনেকেই বই ছাড়া স্কুলে এসেছে।
উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের টাঙ্গুয়া হাওরপাড়ের বিদ্যালয় মন্দিয়াতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সান্জু মিয়া বলেন, কিছু বই ছিল, সেগুলো শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা অফিসে বইয়ের চাহিদা পাঠিয়েছেন। আসলে অন্যদের বই দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন।
তাহিরপুর হিফজুল উলুম আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুহিবুর রহমান বলেন, মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত অনেক ছাত্রছাত্রী জানিয়েছে তাদের বই বন্যার পানিতে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। এ অবস্থায় তিনি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে নতুন বইয়ের চাহিদা পাঠিয়েছেন।
তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী ভাটি তাহিরপুর গ্রামের মনিরাজ শাহ জানায়, বন্যায় তার এসএসসি ও এইচএসসির সব সার্টিফিকেট ও বই ভেসে গেছে। এখন কী করবে বুঝতে পারছে না। তাহিরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী ইতি মনি জানায়, বন্যায় বইয়ের সঙ্গে তার বিদ্যালয়ের পোশাকও ভেসে গেছে।
একই অবস্থা উপজেলার ১৩৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চারটি মাদ্রাসা ও দুটি কলেজের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর।
তাহিরপুর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সাঈদ বলেন, উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধিকাংশ প্রধান শিক্ষক তাকে বই ভেসে যাওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন। এরই মধ্যে ২৫ শতাংশ বইয়ের চাহিদা পাঠিয়েছেন।
উপজেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রমাকান্ত দেবনাথ বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে তাহিরপুর হিফজুল উলুম আলিম মাদ্রাসা, তাহিরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, তাহিরপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, বাদাঘাট দাখিল মাদ্রাসার নতুন বইয়ের চাহিদাপত্র তার কার্যালয়ে এসেছে। বাকিরাও পাঠাবেন বলে তাকে ফোনে জানিয়েছেন।
মন্তব্য করুন