বড় ১০ প্রকল্পের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে পদ্মা সেতুর কাজ। ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকার এ প্রকল্পের কাজ ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ৮৯ শতাংশ হয়েছে। মূল সেতুর কাজ হয়েছে প্রায় ৯৬ শতাংশ। সেতুর সব পিলার ও স্প্যান স্থাপনের মাধ্যমে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে পদ্মার দুই পাড় সংযুক্ত হয়েছে। ২০২১ সালজুড়ে করা হয়েছে আনুষঙ্গিক কাজ। গত নভেম্বরে শুরু হয়েছে সেতুর ওপর রাস্তা তৈরিতে পিচ ঢালাইয়ের কাজ, যা আগামী এপ্রিলে শেষ হবে। এরপর জুনে সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সেতু বিভাগ। সরকারের ১০ মেগা প্রকল্পের দুটি পদ্মা সেতু রেল সংযোগ এবং চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ ২০২২ সালে চালুর লক্ষ্য ছিল। কিন্তু এই প্রকল্পের কাজ নতুন বছরে শেষ হবে না।
পদ্মা সেতু চালুর দিনে ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা ছিল; কিন্তু তা হচ্ছে না। ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক পিছিয়ে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিনে মাওয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা ছিল রেলের। তবে সেতু কর্তৃপক্ষ রেলকে কাজের অনুমতি না দেওয়ায়- এ প্রতীকী ট্রেন চলাচলও হবে না আগামী জুনে।
আরেক মেগা প্রকল্পে ২২ হাজার কোটি টাকার উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল (এমআরটি-৬)। ২০২১ সালের ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত উত্তরার দিয়াবাড়ী থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল পর্যন্ত উড়াল রেলপথ (ভায়াডাক্ট) নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। ২০২২ সালের ১৬ ডিসেম্বর দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রায় পৌনে ১২ কিলোমিটার পথে ট্রেন চলবে জানিয়েছে মেট্রোরেলের নির্মাণকারী কর্তৃপক্ষ ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। গত নভেম্বর পর্যন্ত এই অংশের কাজ হয়েছে ৮৭ শতাংশ। এমআরটি-৬-এর ২৪ সেট ট্রেনের আটটি দেশে এসেছে। নতুন বছরে আসবে আরও দুটি। সেগুলোর নানা পরীক্ষা ও পারফরম্যান্স টেস্ট চলছে। নতুন বছরে ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট ও ট্রায়াল রান হবে।
১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু, কক্সবাজার হয়ে মিয়ানমার সীমান্তের ঘুমধুম পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণকাজ চলছে। এই মেগা প্রকল্পের দোহাজারী থেকে রামু, কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার অংশের কাজ হয়েছে ৬৫ শতাংশ। কক্সবাজার থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার অংশের কাজ মিয়ানমারের অনুমতি না পাওয়ায় শুরুই হয়নি। ২০২৩ সালে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ চালু হতে পারে।
নতুন বছরে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দর থেকে বনানী অংশ চালু হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। ১০ বছর আগে শুরু হওয়া প্রকল্পের অধীনে বিমানবন্দর থেকে মহাখালী, মগবাজার, কমলাপুর হয়ে চিটাগং রোড পর্যন্ত উড়াল পথ নির্মাণ করা হচ্ছে। আরও পাঁচ বছর আগেই চালু হওয়ার কথা থাকলেও হয়নি। তবে ২০২১ সালে বেশ অগ্রগতি হয়েছে।
নতুন বছরে সড়কের আরেক বড় প্রকল্প সোয়া ছয় হাজার কোটি টাকার জয়দেবপুর-চন্দ্রা-এলেঙ্গা মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজ শেষ হবে। এই মহাসড়কের দু'পাশে থাকছে পৃথক সার্ভিস লেন। তাই একে দেশের দ্বিতীয় এক্সপ্রেসওয়ে বলা হচ্ছে। ১৭ হাজার কোটি টাকায় নতুন বছরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দুই পাশে সার্ভিস লেন রেখে চার লেনে উন্নীত করার কাজ ২০২২ সালে শুরু হবে।