দর্শক হলমুখী করতে চলচ্চিত্রে মেধার পরিচয় দিতে হবে: মিশা সওদাগর
অনিন্দ্য মামুন
প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | ১০:৩০ | আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | ১২:৫৯
মিশা সওদাগর। নাম শুনলেই একজন ভিলেন চরিত্রের অভিনয়শিল্পীর প্রতিচ্ছ্ববি ভেসে ওঠে চোখের সামনে। চলচ্চিত্রে তিনি অসম্ভব বদমেজাজি, অন্যায় করেন, চিৎকার করে কথা বলেন, জোর জবরদস্তি করেন, অন্যের বাড়িঘর লুট করেন- আরও কত কী! পর্দায় সচরাচর এমন চরিত্রের বাইরে তাকে দেখা যায়না। কিন্তু বাস্তবে? বাস্তবে সম্পূর্ণ বিপরীত চরিত্রের মানুষ তিনি। সদা হসিখুশি একজন বিনয়ী মানুষ হিসেবেই সহকর্মীদের কাছে পরিচিত তিনি। সম্প্রতি অভিনেতা মিশা সওদাগর সমকাল অনলাইনের মুখোমুখি হন। কথা বলেন, চলচ্চিত্রে নিজের ক্যারিয়ার, দেশের চলচ্চিত্রের ভসিষ্যৎসহ নানা বিষয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন অনিন্দ্য মামুন
সমকাল: পায়ে আঘাত পেয়েছিলেন, এখন শরীর কেমন?
মিশা সওদাগর: ডাক্তারের পরামর্শে ১৫ দিনের বিশ্রামে আছি। ফলে বন্ধ রয়েছে শুটিং। আঘাত পাওয়ায় চলচ্চিত্রের অনেকেরই মন খারাপ হলেও খুশি হয়েছে আমার স্ত্রী। শুটিং বন্ধ থাকায় তাকে সময় দিতে পারছি। তবে মন কিন্তু পরে রয়েছে শুটিং সেটে। কবে আবার শুটিংয়ে ফিরব, এ তাড়ণা কাজ করছে।
সমকাল: শুটিংয়ে ফিরছেন কবে?
মিশা সওদাগর: সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই শুটিং শুরু করব। হাতে অনেক ছবির কাজ রয়েছে। শিডিউল মোতাবেক শুটিংয়ে অংশ নিতে না পারলে প্রযোজকদের লোকসান হয়ে যাবে।
সমকাল: ছবি মুক্তির পরও তো এখন প্রযোজকরা লোকসানে পড়ছেন?
মিশা সওদাগর: এটা ঠিক। এখন মুক্তি পাওয়া অধিকাংশ ছবির প্রযোজক লোকসানে থাকেন। তবে আমাদের শিল্পীদের তো এখানে হাত নেই। দর্শক ছবি দেখতে হলে না এলে আমরা কী আর করতে পারি! তবে মাঝের কিছু সময়ের চেয়ে এখন কিন্তু হলে দর্শক আসছে। আমার বিশ্বাস, আগামীতে চলচ্চিত্র ব্যবসা ঘুরে দাঁড়াবে।
সমকাল: দর্শক ছবি দেখতে হলে আসছে না কেন?
মিশা সওদাগর: আগে ছবি দেখার একমাত্র মাধ্যম ছিল প্রেক্ষাগৃহ। এর পাশাপাশি টেলিভিশন থাকলেও সেখানে পুরনো ছবি সম্প্রচার হতো। আর ইন্টারনেটের এ যুগে ছবি দেখার অনেক মাধ্যম এসেছে। নতুন নতুন বিদেশি ছবিও দর্শকরা ইন্টারনেট ব্যবহার করে দেখতে পাচ্ছেন। তাই আজকাল হলে দর্শক আসছে কম। তাছাড়া, দেশের কয়টা হলে সপরিবারে ছবি দেখার মতো পরিবেশ আছে বলুন! তাই ইচ্ছা থাকলেও অনেকে হলে যাচ্ছেন না।
সমকাল: তাহলে হলে দর্শক ফেরানোর উপায় কি?
মিশা সওদাগর: দর্শক ফেরাতে হলে অবশ্যই আগে হলের পরিবেশ ভালো করতে হবে। পাশাপাশি চলচ্চিত্রে অবশ্যই মেধার পরিচয় দিতে হবে। কারণ এখন দর্শক অনেক সচেতন। তারা ছবির খুটিনাটি বিষয় বোঝেন। তাই তাদের এমন কিছু দেখাতে হবে যাতে তারা চমকে যায়। এক কথায়, চলচ্চিত্রের পুরো টিমকেই মেধাবী হতে হবে।
সমকাল: আপনি তো ব্যবসায়ী পরিবারের সন্তান। চলচ্চিত্রে ভিলেন হতে এলেন কি মনে করে?
মিশা সওদাগর: অভিনেতার বাইরে আমি একজন ব্যবসায়ী। আর অভিনয় তো ভালোবেসেই করি। আমার কাছে এটাই সেরা কাজ। কারণ সমাজের সব ধরনের অসংগতি ভিলেন হয়ে পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে পারি। আসলে ভিলেনের অভিনয় অনেক কঠিন। দেখছেন তো, নতুন নতুন নায়ক আসছে; কিন্তু ভিলেন আসছে ক'জন?
সমকাল: অভিনেতা অভিনেত্রীদের ফেসবুক পেজ, ফ্যান পেজ থাকে। আপনার তেমন কিছুই নেই। এর কারণ কী?
মিশা সওদাগর: আমি তো আসলে ফেসবুক সেলিব্রেটি না। আমি সবসময় মানুষের হৃদয়ে থাকতে চাই। তাদের আসল ভালোবাসাটা অর্জন করতে চাই। ফেসবুক পেজ খুলতে ভক্তদের অনুরোধও এসেছিল। আমি তাদের ভালোবেসে না করে দিয়েছি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খোঁজ খবর রাখতে একটা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রয়েছে- এটাই আমার জন্য যথেষ্ট।
- বিষয় :
- মিশা সওদাগর
- খলনায়ক
- বিনোদন